দেশজুড়ে

রিকশায় ফেলে আসা ৩ লাখ টাকা তিনদিন পর ফিরে পেলেন স্কুলশিক্ষক

রিকশায় ফেলে আসা ৩ লাখ টাকা তিনদিন পর ফিরে পেয়েছেন নওগাঁ জিলা স্কুলের শিক্ষক আব্দুল হাকিম। সদর থানায় বুধবার রাত ৯টার দিকে তার হাতে উদ্ধারকৃত টাকা বুঝিয়ে দেন জেলার নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান মিয়া।

Advertisement

এদিকে তিন লাখ টাকা পেয়েও আত্মসাৎ না করায় রিকশা চালক সাজ্জাদ হোসেনের প্রশংসা করছেন সবাই। তিনি শহরের জনকল্যাণ হঠাৎপাড়ার ওয়াহেদ আলীর ছেলে। সাজ্জাদ হোসনকে সততার জন্য পুলিশ কল্যাণ ফান্ড থেকে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এসপি আব্দুল মান্নান মিয়া।

জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে শিক্ষক আব্দুল হাকিম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশে শহরের মুক্তির মোড় থেকে একটি ব্যাটারি চালিত রিকশায় বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ড যান। সেখান থেকে রাজশাহীর বাসে উঠে প্রায় ১ কিলোমিটার যাওয়ার পর তার মনে পড়ে কম্পিউটার ব্যাগের মধ্যে তিন লাখ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রিকশায় ফেলে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গাড়ি থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাটি খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সদর থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগ পেয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ শহরের ভেতর দিয়ে যাওয়া প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত সদর থানা, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল লি. ও নেক্সাস শোরুমসহ কয়েকটি স্থানের সিসি টিভি ক্যামেরা থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করে ওই রিকশা চালককে শনাক্ত করেন। এরপর তার নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে টাকার মালিককে নিয়ে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে ওই রিকশা চালকের বাসায় যান। এ সময় রিকশা চালক সাজ্জাদ হোসেন তার হাতে ১ হাজার টাকার নোটের তিনটি বান্ডিল (৩ লাখ টাকা) তুলে দেন।

Advertisement

এসআই ইব্রাহিম হোসেনের হাতে টাকার বান্ডিল তুলে দেন রিকশা চালক সাজ্জাদ

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ওই দিন তারা (আব্দুল হাকিম ও তার পরিবার) তড়িঘড়ি করে রিকশা থেকে নেমে যান। পরে দেখি রিকশায় একটি ব্যাগ পড়ে আছে। ব্যাগটি বাড়িতে নিয়ে এসে দেখি অনেক টাকা। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। গরিব মানুষ, টিনের বেড়ার ঘর। টাকাগুলো হারিয়ে গেলে হয়ত বিপদ হবে। এজন্য তিনদিন মুক্তির মোড়ে ঘুরেও টাকার মালিককে পাইনি। এখন টাকাগুলো ফিরিয়ে দিতে পেরে অনেক হালকা মনে হচ্ছে।

টাকা হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহাম্মদ রাশিদুল হক ও লিমন রায় (সদর সার্কেল), সদর থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) ফয়সাল বিন আহসান, এসআই ইব্রাহিম হোসেন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইলিয়াস তুহিন রেজা ও টাকার মালিক আব্দুল হাকিম।

পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, আপনারা সাবধানে সম্পদ বহন করবেন। আমরা ইতোমধ্যে মানি স্কট ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেউ যদি ১০ লাখ টাকা বা তার বেশি বহন করতে চান, তাকে পুলিশি পাহারায় পৌঁছে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কোনো খরচ দিতে হবে না।

Advertisement

আব্বাস আলী/এমএমজেড/জেআইএম