জাতীয়

রোহিঙ্গাদের হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট-পরিচয়পত্র দুঃখজনক

রোহিঙ্গাদের হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র যাওয়াকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

Advertisement

মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটনে ঢাকা লেডিস ক্লাবে কুসুমকলি স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, ব্যাগ ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

চট্টগ্রামে ভুয়া জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সব ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত নথি সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। শেষ ৫ মাসে এরকম ৮০ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়েছে বলেও সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

সম্প্রতি টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদের কাছে পাওয়া যায় স্মার্টকার্ড। ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের হিলভিউ আবাসিক এলাকার বার্মা কলোনির ভুয়া ঠিকানায় বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল এই সন্ত্রাসী।

Advertisement

এমনকি তথ্য জালিয়াতি করে জন্ম নিবন্ধন সনদ নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। জালিয়াতির মাধ্যেমে জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়ে পাসপোর্ট করাতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর মনসুরাবাদ পাসপোর্ট কার্যালয়ে আটক হয় রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ ফয়সাল।

সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল লতিফপুরের স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করে গত ২৯ অগাস্ট ফয়সাল পাসপোর্টের আবেদন করতে যান চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ বিভাগীয় পাসপোর্ট কার্যালয়ে। আবেদনের সঙ্গে ফয়সাল ‘২০০০১৫৯৩৫২৫০৬১৫২০’ নম্বরের একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দেন।

জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সংগ্রহকে জাতীয় নিরাত্তার জন্য হুমকি বলে আখ্যায়িত করছেন বিশেজ্ঞরা।

এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের হাতে পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র যাওয়ার বিষয়টিকে খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি এ বিষয়ে বলেন, এ ব্যাপারে আমরা শক্ত অবস্থান নিয়েছি। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে যাতে কেউ জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে না পারে, সে জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। ভুয়া হলে আমরা সেগুলো জব্দ করব।

Advertisement

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পর্কে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি আমাদের অগ্রাধিকার হিসেবে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি জাতিসংঘের আগামী অধিবেশনে উথাপন করা হবে। অবশ্যই সেখানে বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি তোলা হবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অনেক টাকা-পয়সা দিচ্ছে, তারা বড় দাতা। এই সহায়তা চালিয়ে যাবে। তবে মিয়ানমারের জেনারেলের বিরুদ্ধে একটি ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া, তারা আর কিছু করেনি। মিয়ানমারকে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা দিয়েছে।

কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। আশা করছি, আগামীতে কোনো সময় প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এখনও আলাপ-আলোচনা চলছে। কেউ কেউ প্রস্তাব দিয়েছেন। শুধু শুধু বসে তো লাভ নেই। আমরা অনেকবার বসেছি। আমরা চাই, আলোচনা যাতে ফলপ্রসু হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে এই এলাকায় যতগুলো রাষ্ট্র আছে, সবার জন্য অনিয়শ্চতা তৈরি হবে। আর অনিশ্চয়তা তৈরি হলে উন্নয়নও হয় না, লক্ষ্যবস্তুগুলোও অর্জন সম্ভব হবে না। আমরা তাদের এটাই বলেছি। এইখানে যদি ঝামেলা হয়, তাহলে সেটা সবার জন্যই অমঙ্গল হবে।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কমিটি করার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে হুটহাট করে করলে হবে না। কমিটিতে কাদের নিলে গ্রহণযোগ্য হবে, সেগুলোও আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। এখনও পুরোপুরি হয়নি।

এমএএস/জেডএ/এমকেএইচ