জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি ও অনিয়মগুলো সরকারের অর্জনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। অর্জনগুলোকে ম্লান করে দিচ্ছে। একের পর এক ঘটনা আসছে জাতির সামনে। দুর্নীতি হয়ে গেছে একটি হাস্যরসের বিষয়। অদ্ভুত ধরনের দুর্নীতি হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন দফতরে সংঘটিত দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তে সংসদীয় কমিটি গঠন করতে হবে।
Advertisement
সোমবার রাতে সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দেয়া বক্তব্যে সরকারের বিভিন্ন দফতরের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ৫ হাজার ৫শ’ টাকার বই স্বাস্থ্য অধিদফতর কিনেছে ৮৫ হাজার ৫ টাকায়। প্রতিষ্ঠান থেকে এই কেনাকাটা হয়েছে। সার্জারি শিক্ষার্থীদের প্রাকটিস অব সার্জারি বই গোপালগঞ্জের সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের জন্য ১০ কপি কেনা হয়েছে। এজন্য পরিশোধ করা হয়েছে ৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
অন্যান্য দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, পুকুর খনন শিখতে বিদেশে যাবেন ১৬ জন কর্মকর্তা। এজন্য ব্যয় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। রূপপুরের বালিশকে তোষকের নিচে নিয়ে গেছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পর্দা কেনার ঘটনা। একটি পর্দার দাম ধরা হয়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই একটি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্ট কেনার খরচ ৫ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, একটি বিএইএস জেনারেটিং প্ল্যান্ট কেনার খরচ ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা, একটি ভ্যাকুয়াম প্ল্যান্ট ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মনিটরিং প্লেট ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, তিনটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন ৩০ লাখ ৭৫ হাজার। একটি হেড হার্ডিয়াক স্টেথোস্কোপের দাম ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। এ রকম অবিশ্বাস্য দামে ১৬৬টি পণ্য কেনা হয়েছে।
Advertisement
লুটপাট ও অনিয়মে ডুবতে বসছে ওয়াসা। মুন্সিগঞ্জে যশোলদিয়া থেকে পদ্মার পানি পরিশোধন করে ঢাকা সরবরাহের প্রকল্প শেষ হয়েছে আট মাস আগে। কিন্তু এখনো তা চালু হয়নি। সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলেও ৫ মিনিটে পানির পাইপ ফেটে ভেস্তে গেছে পুরো প্রকল্প। কম পুরুত্বের নিম্নমানের পাইপ সরবরাহের প্রতিবাদ করায় প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, এই সংসদে অনেক সিনিয়র রাজনীতিক ও সংসদ সদস্য রয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি ও অনিয়ম অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংসদ সদস্যদের দিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। যেন জাতি এই ভয়াবহ হাস্যরসের দুর্নীতি থেকে মুক্তি পায়।
এইচএস/এসএইচএস/এমকেএইচ
Advertisement