প্রায় আট বছর ধরে কলেজে যান না রাজশাহীর বরেন্দ্র কলেজের সহকারী অধ্যাপক তসলিমা খাতুন। কলেজে না গেলেও একজন নারীকে ক্লাস নেয়ার জন্য রেখেছেন তিনি। প্রতি মাসে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে ওই নারীকে সামান্য অর্থ ধরিয়ে দেন এই শিক্ষিকা। তার এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।
Advertisement
নাম প্রকাশ না করা শর্তে রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজের এক শিক্ষক বলেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে কোনো ক্লাস নেন না তসলিমা খাতুন। ক্লাস নেয়ার জন্য তিনি মিমি নামের একজনকে ঠিক করে রেখেছেন। তসলিমার পরিবর্তে তার ক্লাসগুলো নেন মিমি। বিনিময়ে মিমিকে মাসে ৫-৬ হাজার টাকা দেন তসলিমা। তবে মিমির শিক্ষক নিবন্ধন নেই।
তসলিমা রাজশাহীর প্রভাবশালী এক ব্যক্তির স্ত্রী হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ভয়ে কিছু বলে না। স্বামীর দাপটে বছরের পর বছর এভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন তসলিমা খাতুন।
বরেন্দ্র কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাষ্য, আমরা ওই শিক্ষিকাকে নামেই চিনি। কিন্তু কখনও ক্লাসে পাইনি। গত কয়েক বছর তাকে কলেজে দেখিনি আমরা।
Advertisement
নাম প্রকাশ না করে রাজশাহীর একজন প্রবীণ কলেজশিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষক ছুটিতে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তার ক্লাস নেয়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে তাকে নিবন্ধিত শিক্ষক হতে হবে। কিন্তু নিজে অনুপস্থিত থেকে একজন অনিবন্ধিত শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেয়া নিয়মবহির্ভূত।
তিনি আরও বলেন, কলেজে হাজির না হয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন অবৈধ। তসলিমা খাতুন যদি সেটি করে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধেও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হলে এ সুযোগ আরও অনেকেই নেয়ার চেষ্টা করবে। এতে শিক্ষা ব্যবস্থা কলুষিত হবে।
এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে অধ্যাপক তসলিমা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর মো. আব্দুল মালেক বলেন, সহকারী অধ্যাপক তসলিমা খাতুন নিয়মিত কলেজে আসতে পারেন না। এজন্য তিনি একজনকে ঠিক করে দিয়েছেন তার ক্লাস নেয়ার জন্য। তবে মাঝে মধ্যে কলেজে আসলে ক্লাস নেন তসলিমা খাতুন।
Advertisement
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/জেআইএম