হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা তাদের সাহায্য করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন। রোববার হংকংয়ে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেট অভিমুখে মিছিল করে যাওয়ার সময় অনেক বিক্ষোভকারীর হাতে মার্কিন পতাকা দেখা যায়।
Advertisement
তাদের বহন করা সেসব ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, দয়া করে (প্লিজ) হংকংকে রক্ষা করুন’ এবং ‘হংকংকে আবার সেরা নগরীতে পরিণত করুন।’ তারা আধা স্বায়ত্তশাসিত নগরটিকে চীনের হাত থেকে মুক্ত করার জন্যও স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীদের প্রধান একটি দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়ার পরও ওই শহরে গত ১৪ সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চলছে। হংকংয়ের ব্যাপারে নাক না গলানোর জন্য চীনের কর্তৃপক্ষ বারবার করে হুঁশিয়ার করে আসছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের উদ্দেশ্যেই এ হুশিয়ারি।
তারা বলছে, ১৯৯৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে পাওয়া এই সাবেক উপনিবেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। বিক্ষোভকারীরা দাবি করছেন, একটি নয়, তাদের পাঁচটি দাবির সবগুলোই মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
Advertisement
বিক্ষোভকারীরা যা চানহংকং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ শুরু হয় একটি বিতর্কিত বন্দি বিনিময় আইনের (প্রতর্পণ বিল) খসড়াকে কেন্দ্র করে। বিলে বলা ছিল, হংকংয়ে কেউ গ্রেফতার হলে তাকে চীনের হাতে তুলে দেয়া যাবে, যেখানে রয়েছে ভিন্ন ধরনের বিচার ব্যবস্থা।
খসড়া আইনটি বাতিলের দাবিতে এরপর সেখানে নিয়মিতভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলতে থাকে। লাখ লাখ মানুষ তিন মাস ধরে বিক্ষোভ করে আসছেন। প্রথমে প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলেও পরে ধীরে ধীরে তা স্বাধিকার আন্দোলনে রুপ নেয়।
ব্যাপক জন বিক্ষোভের মুখে গত জুন মাসে খসড়া বিলটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। পরে গত সপ্তাহে পাকাপাকিভাবে তা বাতিল করা হয়। এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে আরও চারটি দাবিদাওয়া পেশ করা হয়। সেগুলো হলো:
• সকল বিক্ষোভকারীর জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে হবে।• বিক্ষোভকারীদের কর্মকাণ্ডকে দাঙ্গা হিসেবে বর্ণনা করা বন্ধ করতে হবে।• নিরপেক্ষভাবে পুলিশের জুলুমবাজির তদন্ত করতে হবে।• হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী, আইন পরিষদ ও সংসদ নির্বাচনে অবাধ ভোটের আয়োজন করতে হবে।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্র কী জড়িয়ে পড়তে পারে?হংকংয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য বিক্ষোভকারীদের আকুল আবেদন সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘একজন মহান নেতা যাকে চীনা জনগণ খুবই সম্মান করেন।’ বলে বর্ণনা করেছেন।
গতমাসের মাঝামাঝি ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি টুইট করেন। যাতে তিনি লেখেন, ‘আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই যে প্রেসিডেন্ট শি দ্রুত এবং মানবিকতার সঙ্গে হংকং সমস্যার সমাধান করবেন।’ তারপর থেকে হংকংয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
গতকাল শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেছেন, চীন সংযত আচরণ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। চীন অবশ্য হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের মদদ দেয়ার জন্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে দায়ী করেছে।সূত্র : বিবিসি
এসএ/জেআইএম