দুপুর ১২টা। রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় প্রচণ্ড যানজটে থমকে আছে যানবাহন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন ও ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে চলমান মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ১১টায় শেষ হলেও তখন পর্যন্ত রাস্তাঘাটে যানবাহন স্বাভাবিক হয়নি। যানজটের পাশাপাশি তীব্র গরমে মানুষ হাসফাঁস করছিল। দরিদ্র রিকশাচালকরা দাবদাহে দর দর করে ঘামছিল। পরিধেয় শার্ট ও গোঞ্জি ভিজে একাকার। ছাতা মাথায় রাস্তায় যারা হেটে যাচ্ছিলেন তারাও ঘামছিলেন। ৬০ বছর বয়সী রমিজ আলী। ১৫ বছর যাবৎ ঢাকায় রিকশা চালান। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে রমিজ আলী বলেন, ‘গরমে জানডা বাইর অইয়া যাইতাছে। এমন গরমে কেমনে প্যাসেঞ্জার লইয়া রিকশা চালাই!’ এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নরসিংদীতে সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড গরমে ফুটপাতের ভ্রাম্যমান লেবু ও আখের শরবতের দোকানগুলোতে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। নানা বয়সী নারী, পুরুষ ও শিশুরা তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বরফ মেশানো শরবত পান করছেন। কেউ কেউ আবার দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে খাচ্ছেন।নাজমা আক্তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে জানান, ‘এক নিকটাত্মীয়ের ছেলেকে কলাভবনে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছিলাম। আসার পথে রিকশা না পেয়ে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত হেটে আসতে হয়। এতে গরমে অস্তির হয়ে গেছি’। ফুটপাতের শরবত খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে জেনেও গরমে তৃষ্ণা মেটাতে শরবত কিনে খাচ্ছেন অনেকেই।১০বছরের শিশু রাহভার। প্রতি শুক্রবার স্কুল ছুটি থাকলেও বাড়ির কাছে একটি ড্রয়িং স্কুলে ড্রয়িং শিখতে যায়। ক্লাস শেষে সে মায়ের কাছে জানায়, গরমে মাথা ধরেছে, তাই আজ বিকেলে প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়বে না। তীব্র দাবদাহ গৃহবধূরাও বেশ ভালভাবেই টের পেয়েছেন। লালবাগের খাজে দেওয়ানের রাহেলা খাতুন নামে এক গৃহবধূ জানান, রান্না করতে গিয়ে আজ গরমে রীতিমতো ঘেমে গোসল করার মতো অবস্থা হয়েছে তার। আজ জুমার নামাজ পড়তে গিয়েও মসজিদে বসে অনেকেই ঘেমেছেন। তবে দুপুরের পর আকাশ মেঘলা দেখে অনেকেই বৃষ্টি হতে পারে ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।এমইউ/এসকেডি/একে/পিআর
Advertisement