দেশজুড়ে

অপারেশন থেমে আছে তৌহিদুলের!

শিশু তৌহিদুলের বয়স সাড়ে তিন বছর হলেও পৃথিবীতে আগমন উপলক্ষে তাকে ঘিরে সুখের অনুভূতিগুলো এখনও হয়তো চোখ বন্ধ করলে দেখতে পায় তার বাবা-মা। জন্ম থেকেই শিশুটির অসুস্থ থাকলেও বুঝতে পারেননি তারা।

Advertisement

সম্প্রতি হার্টের সমস্যার দুঃসংবাদ সকল সুখের অনুভূতি ভুলিয়ে দিয়েছে তাদের। যে সন্তানকে ঘিরে তাদের স্বপ্নের শেষ ছিল না, সেই তৌহিদুলকে বাঁচানোই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে বাবা-মায়ের। কিছুদিন হলো তৌহিদুলের হার্টে একটি ব্লক ও ছিদ্র ধরা পড়েছে। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে অপারেশন করলে হয়তো বেঁচে যাবে তৌহিদুল।

ডাক্তার আরও জানিয়েছেন, তার অপারেশনসহ চিকিৎসা বাবদ খরচ হবে প্রায় ৩ লাখ টাকা। কিন্তু পরিবারের সেই টাকা জোগাড় করার মতো অবস্থা নেই। যা ছিল, এতদিন চিকিৎসা করাতে শেষ হয়ে গেছে। কোনো উপায় না থাকায় একমাত্র ছেলে সন্তানকে বাঁচাতে হৃদয়বান মানুষদের দৃষ্টি চেয়েছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের হাঁসকুঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. সাইদুল হক সাদ্দাম ও স্ত্রী তামান্না।

জন্ম থেকেই তৌহিদুল বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগলে তাকে সুনামগঞ্জ ও সিলেট ওসমানি মেডিকেলসহ বিভিন্নস্থানে ডাক্তার দেখানো হয়। তাতেও সুস্থ না হওয়ায় গত ২৯ আগস্ট তাকে রাজধানীর হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হলে সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর হার্টে একটি ছিদ্র ও ব্লক ধরা পড়ে। ডাক্তার জানিয়েছে, সমস্যাটি জন্ম থেকেই। তারা দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। এজন্য প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হবে জানান।

Advertisement

তৌহিদের বাবা মো. সাইদুল হক একজন দিনমুজর। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানসহ ১১ জন সদস্যের একমাত্র উপার্জনকারী তিনি। অনেক কষ্টে চলে তাদের সংসার। এরই মাঝে সন্তানের এমন সংবাদে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

শিশুটির মা তামান্ন বেগম বলেন, কষ্ট করে কিছু টাকা জোগাড় করে তৌহিদুলকে নিয়ে ঢাকা হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে গেছিলাম। ডাক্তার কয়েকটি টেস্ট করে জানিয়েছেন আমার ছেলের হার্টে একটি ছিদ্র ও ব্লক রয়েছে। তাড়াতাড়ি নাকি অপারেশন করাতে হবে। অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের তো এত টাকা নেই। আমার স্বামী অন্যের বাড়িতে কামলা দিয়ে পরিবার চালায়। এখন এত টাকা কোথায় পাই।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. সাইম উদ্দিন বলেন, পরিবারটির পক্ষে এত টাকা সংগ্রহ করা অসম্ভব। আমরা এলাকাবাসী চেষ্টা করছি তৌহিদুলের পাশে দাঁড়াবার। সমাজের সকল স্থরের মানুষ এগিয়ে এলে হয়তো শিশুটি স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।

শিশুটির চিকিৎসার অর্থ যোগাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়টি প্রচার করছেন মমিন নামে এক স্বেচ্ছাসেবক। তোহিদুলের পাশের গ্রামে তার বাড়ি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গত দুই দিনে আমরা তৌহিদুলের চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা সহযোগিতা পেয়েছি। আরও কিছু সহযোগিতা পাওয়া গেছে সেটার হিসাব এখনও করা হয়নি।

Advertisement

তিনি বলেন, পরিবারটি খুবই গরিব। তাদের পক্ষে শিশুটির চিকিৎসার টাকা জোগাড় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এটা জেনে আমরা এলাকার কিছু ছেলে শিশুটির পাশে দাঁড়িয়েছি। সাড়া পাচ্ছি, তবে খুবই কম। কিন্তু ডাক্তার বলেছে দ্রুত অপারেশন করতে হবে। এজন্য বড় সহযোগিতা প্রয়োজন। কেউ যদি এটুক সহযোগিতা করে হয়তো সবাই মিলে তৌহিদুলকে বাঁচাতে পারবো।

তোহিদুলের বিষয়ে আরও জানতে কথা বলতে পারেন তার বাবা সাইদুল হকের সঙ্গে। মোবাইল : ০১৭৬৫-২৭০৪৮১।

রাহাত/এমএএস/জেআইএম