যশোরের শার্শা উপজেলায় ঘুষ না দেয়ায় নিজ ঘরে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর মামলায় গ্রেফতার তিন আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার দুপুরে তাদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
Advertisement
এদিকে, ঘটনা তদন্তে পুলিশের গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। রোববার প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও কমিটিকে নতুন করে সাতদিন সময় দেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, শার্শায় নিজঘরে গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার তিন আসামিকে রোববার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক সাইফুদ্দিন হুসাইন শুনানি শেষে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিরা হলেন- শার্শার চটকাপোতা গ্রামের কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, লক্ষ্মণপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ ও আব্দুল কাদের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শেখ মোনায়েম হোসেন বলেন, রোববার শুনানি শেষে তিন আসামির তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিচারক। ইতোমধ্যে তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রিমান্ড শেষে তাদের ডিএনএ টেস্টের জন্য আলামত সিআইডিতে পাঠানো হবে।
Advertisement
এ মামলার অজ্ঞাত প্রধান আসামি প্রসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মোনায়েম হোসেন বলেন, অজ্ঞাত আসামি শনাক্তে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
এর আগে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদারকে প্রধান ও নাভারণ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান ও কোর্ট ইন্সপেক্টর ফকির আজিজুর রহমানকে সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়।
তিনদিনের মধ্যে অর্থাৎ রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল কমিটির। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। কমিটির পক্ষ থেকে আরও সাতদিন সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, তদন্ত কমিটি আরও সাতদিন সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে। আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে কমিটি।
Advertisement
জানা যায়, ২ সেপ্টেম্বর শার্শা উপজেলার লক্ষ্মণপুর এলাকায় ওই গৃহবধূর বাড়িতে গভীর রাতে যান এসআই খায়রুল, সোর্স কামরুলসহ চারজন। তারা ওই গৃহবধূর কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেয়ায় এসআই খায়রুল ও কামরুল গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন।
৩ সেপ্টেম্বর ভিকটিম শার্শা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত একজনের নামে মামলা করেন। মামলাটি বৃহস্পতিবার পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় যশোর পিবিআই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয় পরিদর্শক শেখ মোনায়েম হোসেনকে। দায়িত্ব পেয়েই ৬ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূ বাড়ি পরিদর্শন ও জবানবন্দি গ্রহণ করেন তিনি।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর সকালে ওই গৃহবধূ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে এলে গণধর্ষণের বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই দিন রাতেই শার্শা থানায় মামলা করেন গৃহবধূ। মামলায় এসআই খায়রুলের নাম উল্লেখ না করে কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, আব্দুল লতিফ, আব্দুল কাদের ও এক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মিলন রহমান/এএম/পিআর