স্বাস্থ্য

বিএসএমএমইউতে মরফিন না পেয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রোগীরা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পেলিয়েটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মৃত্যু পথযাত্রী ক্যানসারসহ নিরাময় অযোগ্য রোগীদের বিনামূল্যের মরফিন ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও সিরাপ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

Advertisement

মাস দুয়েক আগেও ১৯ শয্যাবিশিষ্ট এ ওয়ার্ডের প্রতিটি রোগীকে হাসপাতাল থেকে তীব্র ব্যথানাশক মরফিন ইনজেকশন, ট্যাবলেট এবং সিরাপ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হলেও বর্তমানে তা করা হচ্ছে না।

ফলে হাসপাতালের বেডে রোগীরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। সরবরাহ না থাকায় চিকিৎসক ও নার্সরা মরফিন ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও সিরাপ রোগীদেরকে বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে বলছেন। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমতি সাপেক্ষে সরকারিভাবে খুবই সাশ্রয়ী মূল্যে (মাত্র ১২-১৫ টাকা প্রতি পিস) মরফিন পাওয়া গেলেও বাইরের ফার্মেসিতে তা ৩৫০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএসএমএমইউর ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত মরফিন ইনজেকশনসহ অন্য ওষুধ থাকলেও রোগীদের তা দেয়া হচ্ছে না।

Advertisement

গত শুক্রবার বিএসএমএমইউয়ের পেলিয়েটিভ ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, বিভাগে ১০ মহিলা ও ৯ পুরষ মিলিয়ে মোট ১৯ বেড রয়েছে। এ বেডগুলোতে ক্যানসারসহ নিরাময় অযোগ্য বিভিন্ন রোগী যারা লাস্ট স্টেজে রয়েছেন তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ রোগীর শরীর জীর্ণশীর্ণ। তীব্র যন্ত্রণায় বার বার তাদের চেহারা কুঁকড়ে যাচ্ছে। যে কোনো সময় তারা মারা যেতে পারেন।

চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতাল থেকে দুই একটি ট্যাবলেট ছাড়া কোনো ইনজেকশন সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে ফার্মেসি থেকে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগের কর্তব্যরত একাধিক চিকিৎসক জানান, পেলিয়েটিভ ওয়ার্ডের প্রতিটি রোগী মরণাপন্ন। তাদের প্রত্যেককে ব্যথামুক্ত নিশ্চিত করতে এ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হয়। এসব রোগীর বেশির ভাগকে মরফিন ইনজেশন দিয়ে ব্যাথা কমাতে হয়। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের সাসটেইন রিলিফ ড্রাগ (রোগীকে দিনে একবার/ ২বার দেয়া হয়) ছাড়া অন্য কোনো ওষুধের সরবরাহ নেই। বেশির ভাগ রোগী লাস্ট স্টেজে থাকায় তাদের মরফিন ছাড়া কাজ হয় না। ফলে বাইরে থেকে এনে মরফিন ইনজেকশন ও ট্যাবলেট খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনবার তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। সম্প্রতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তার মেয়াদ আর বাড়ানো হয়নি। তার অনুপস্থিতিতে বিকল্প কাউকে দিয়ে পেলিয়েটিভ ওয়ার্ডের রোগীদেরকে বিনামূল্যের ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তিনি খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছেন জানিয়ে কিছুক্ষণ পর বলেন, বিশেষ ব্যবস্থায় সব ওষুধের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এ মুহূর্তে ইনজেকশনসহ প্রায় সবগুলো ওষুধের সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানা তিনি।

Advertisement

তবে ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানান, ভিসি স্যারের কাছে সঠিক তথ্য নেই।

এমইউ/এএইচ/জেআইএম