একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুই স্কুলছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে বরগুনার বামনা উপজেলার রামনা লঞ্চঘাট এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে তিন স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
Advertisement
এরা হলো- উপজেলার উত্তর রামনা গ্রামের বাসিন্দা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী (১৬) এবং একই গ্রামের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা দুজন বন্ধু। এ ঘটনায় শনিবার রাতে নির্যাতিত এক ছাত্রীর অভিভাবক বাদী হয়ে বামনা থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, অভিভাবকদের অজান্তে গোপনে একটি মোবাইল ব্যবহার করতো তিন স্কুলছাত্রী। তাদের মোবাইল ব্যববহারের বিষয়টি জানতে পারে একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্র। এরপর বিষয়টি তার বন্ধুকে জানায় সে।
পরে দুই বন্ধু মিলে গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় ছুটির পর ওই ছাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়। মোবাইলটি ফিরে পেতে ছাত্রীদের কাছে এক হাজার টাকা দাবি করে তারা।
Advertisement
ছাত্রীরা ওই টাকা দিতে রাজি হলে তাদেরকে টাকা নিয়ে রামনা লঞ্চঘাট এলাকার শিকদার বাড়ির একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে আসতে বলা হয়। ছাত্রীরা তাদের মোবাইল আনতে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে যায়।
সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা দুই বন্ধু ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ছাত্রীরা সংখ্যায় তিনজন হওয়ায় ধর্ষণের হাত থেকে বেঁচে যায়।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রীদের মারধর করে তাদের ফোনে ছবি তুলে রাখে; সেই সঙ্গে ঘটনা কাউকে জানালে ওই ছবি বিকৃত করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় দুই বন্ধু। পরে নির্যাতিত তিন ছাত্রী স্কুলে এসে ঘটনাটি শিক্ষকদের জানায়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি বিদ্যালয়ে আসার পর তিন শিক্ষার্থী আমার পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করে। পরে তাদের কান্নার কারণ জানতে চাইলে ঘটনা খুলে বলে। বিষয়টি জেনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দশম শ্রেণির ছাত্রকে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে আটক করি। পরে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানাই। বামনা থানা পুলিশ বিদ্যালয়ে এসে অভিযুক্ত ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। অপর অভিযুক্ত পালিয়ে যাওয়ার সময় রামনা খেয়াঘাট থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দেয়।
Advertisement
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বামনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদুজ্জামান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রীদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। রোববার সকালে গ্রেফতারকৃতদের বরগুনা আদালতে পাঠানো হবে।
মো. সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এএম /এমকেএইচ