ব্যাটিংয়ে নামলে হয়ে যায় বোলিং পিচ, ফিল্ডিংয়ে নামলে হয় ব্যাটিং পিচ- বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাপারে প্রায়ই মজা করে বলা হয় এমন কথা। সাধারণত বড় দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুর দিককার অসহায়ত্ব বোঝাতেই মজা করে বলা হতো কথাটি।
Advertisement
কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের নবীন দল আফগানিস্তানও যেনো প্রমাণ করছে এ কথাটিই। কেননা পাঁচদিনের ম্যাচের তিনদিন শেষে তারাই রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। ব্যাটিং কিংবা বোলিং- দুই বিভাগেই বাংলাদেশকে পুরোপুরি পরাস্ত করে যাচ্ছে তারা।
আগে ব্যাট করে দারুণ খেলে দাঁড় করিয়েছে ৩৪২ রানের সংগ্রহ, পরে বাংলাদেশকে বেধে ফেলেছে মাত্র ২০৫ রানেই। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে এরই মধ্যে ৮ উইকেটে করে ফেলেছে ২৩৭ রান, এগিয়ে গেছে ৩৭৪ রানে। ফলে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জটা বেশ কঠিনই হতে যাচ্ছে।
তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজেদের অসহায়ত্ব যেন মেনেই নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে পূর্ণ কৃতিত্ব দিয়েছেন আফগানদের, জানিয়েছেন সত্যিই ভালো খেলেছে সফরকারীরা।
Advertisement
মিরাজের ভাষ্যে, ‘একজন বোলার হিসেবে আমি বলতে পারি যে, আমরা ভালো জায়গায় বল করেছি; কিন্তু উইকেট বের করতে পারিনি। ওরা খুব ভালো ব্যাটিং করেছে, অনেক ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে। আমি যখন বোলিং করেছি, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে উইকেটের জন্য। আমি কিন্তু শেষের উইকেট পেয়েছি, আগেরগুলো পাইনি। অনেক কষ্ট করে উইকেট নেয়ার চেষ্টা করেছি, তবে ওরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছে এটা মানতেই হবে।’
আফগানদের এতো ভালো খেলার পেছনে তাদের মানসিক প্রস্তুতিটাও নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘ওরা মাত্র শুরু করেছে টেস্ট ক্রিকেটে খেলা। তাই ওরা চাইবেই যেনো বিশ্বকে ভালোকিছু করে দেখাতে পারে। এ কারণে ওদের উত্তেজনাটাও বেশি থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে ওরা মানসিকভাবে এমন প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে আমাদের সঙ্গে খেলার জন্য। আমাদের প্রস্তুতিও ভালো ছিলো। তারপরও মানুষের ভালোদিন-খারাপদিন আসতেই পারে। আমাদের দূর্ভাগ্য যে, দুইটা দিন আমাদের ভালো যায়নি।’
এ সময় খুব অল্প সময়েই টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ায় আফগানদের প্রশংসা করে মিরাজ বলেন, ‘আসলে একটা জিনিস হলো, ওরাও কিন্তু ডোমেস্টিক ক্রিকেট খেলেছে। শুধু যে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিই খেলেছে এমন নয়। ওদের দেশে যখন ডোমেস্টিক ক্রিকেট খেলেছে তখন চারদিনের ম্যাচ খেলেছে। এছাড়া ওদের অনেক ব্যাটসম্যান যারা বেশ পরিণত। অনেকের বয়স আছে ত্রিশের ওপরে, তাই আমার কাছে মনে হয় অনেক পরিণত ছিলো এবং জিনিসটা ভালোভাবে আত্মস্থ করতে পেরেছে। টেস্ট ক্রিকেটটা কিভাবে খেলতে হবে, সেটা খুব তাড়াতাড়িই বুঝতে পেরেছে।’
পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়া হয়, তাহলে ১৯ বছরে বাংলাদেশ কী করলো?- এ প্রশ্নের জবাবে খানিক কৌশলী হয়ে মিরাজ জবাব দিলেন, ‘দেখুন, আমি যেটা বললাম, ক্রিকেটে ভালো দিন, খারাপ দিন আসতেই পারে। এমন না যে আমরা টেস্ট ক্রিকেটে বড় দলকে হারাইনি। আমরা সবাই জানি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি, আবার জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরেও গেছি। তাই এটা মেনে নিতেই হবে যে, ক্রিকেটে সবারই খারাপ সময়, ভালো সময় যায় মানুষের।’
Advertisement
এসএএস/আইএইচএস/এমকেএইচ