চাঁদের পৃষ্ঠ ছোঁয়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ভারতের চন্দ্রযান-২। তবে এই অভিযানকে ব্যর্থ নয় বরং ৯৫ শতাংশ সফল বলছে ভারত। দেশের জনগণও এটাকে ভারতের সাফল্য হিসেবেই দেখছে। কিন্তু একেবারেই উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছে পাকিস্তান।
Advertisement
চন্দ্রযান ২ প্রত্যাশিত সাফল্য না পাওয়ায় যে দারুণ খুশি হয়েছে তারা সেটাই স্পষ্ট করেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র। রীতিমতো টুইট করে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করলেন পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী চৌধুরী ফাওয়াদ হুসেইন।
চন্দ্রপৃষ্ঠে পা রাখার আগে ২.১ কিলোমিটার দূরত্বেই ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইসরোর। চাঁদের অন্ধকার দিকের রহস্য উন্মোচনে বেরিয়ে নিজেই অন্ধকারে হারিয়ে গেছে বিক্রম। এর ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। অপরদিকে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) এক কর্মকর্তা বলেছেন, ৯৭৮ কোটি টাকার এই মহাকাশ যান চন্দ্রযান-২ এর মিশন পুরোপুরি ব্যর্থ নয়।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১ টা ৪০ মিনিট থেকে ১টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে চাঁদের মাটিতে পা রাখার কথা ছিল চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারের। কিন্তু অবতরণের আগ মুহূর্তে সংকেত পাঠানো বন্ধ করে দেয়ায় সেটি আদৌ অবতরণ করতে পেরেছে কিনা, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য ইসরো পায়নি। ইতিবাচক কোনো সাড়াই পাওয়া যায়নি আর।
Advertisement
শনিবার ভোরের দিকে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এবারের মতো সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানো হলো না ইসরোর। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই পরিশ্রম আর সাহসকে যখন কুর্নিশ জানাচ্ছে দেশবাসী, ঠিক তখনই কটাক্ষ করলেন প্রতিবেশী দেশের মন্ত্রী। চন্দ্রযান ২ এর মিশন নিয়ে একের পর এক টুইট করে ভারতকে রীতিমতো অপমান করতে থাকেন ফাওয়াদ হুসেইন। তিনি ভারতকে ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘অঅঅ… যে কাজটা পারো না, সেটা করারই দরকার নেই। প্রিয় ‘এন্ডিয়া’। ইন্ডিয়ার বানান বদলে ‘এন্ডিয়া’ লিখে মন্ত্রী বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, ভারতের মিশন শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে তার টুইট পোস্ট হতেই তার বিরুদ্ধে সমালোচনা ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এক ভারতীয় কটাক্ষের সুরে লিখেছেন, মজার বিষয় হলো, চন্দ্রযান ২ ফাওয়াদ হুসেইনকে সারারাত জাগিয়ে রেখেছিল। তবে শুধু ভারতীয়রাই নয়, পাকিস্তানের তরফ থেকেও সমালোচিত হয়েছেন মন্ত্রী।
সামাজিক মাধ্যমে এক পাকিস্তানি নাগরিক লিখেছেন, নিজেদের লজ্জায় ফেলা বন্ধ করুন। ভারত অন্তত চাঁদে পা রাখার চেষ্টা করেছে। আর আমরা চাঁদকে দেখার জন্য লড়াই করতে থাকি। যে কোনও দেশের বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করা উচিত। আর সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত।
এসব সমালোচনায় অবশ্য দমানো যায়নি এই মন্ত্রীকে। এক নেটিজেনের টুইটে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ঘুমিয়ে পড়, চাঁদের বদলে ওই খেলনাটা মুম্বাইয়ে নেমেছে। আবার অন্য এক টুইটে লিখেছেন, ভারতীয়রা অদ্ভূত প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। যেন আমার জন্য মিশন ব্যর্থ হয়েছে। আমি বলেছিলাম অকারণে ৯০০ কোটি টাকা নষ্ট করতে? এবার মাথা ঠান্ডা করে ঘুমিয়ে পড়ুন।
Advertisement
এখানেই থামেননি তিনি। ইসরো তথা দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ নিয়েও বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। এই মন্ত্রী বলেন, মোদির কথা শুনে মনে হচ্ছে, সে রাজনীতিবিদ নন, মহাকাশচারী। লোকসভায় মোদিকে প্রশ্ন করা উচিত, কেন গরিব দেশে ৯শ কোটি টাকা এভাবে নষ্ট করা হলো।
টিটিএন/জেআইএম