শেয়ারহোল্ডারদের কোন ধরনের লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা আসায় গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর তালিকায় শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে আগ্রহী না হওয়ায় সপ্তাহজুড়েই দাম কমেছে। এতে কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় ধরনের পতন হয়েছে। এদিকে দাম কমে যাওয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে রাজি না থাকায় সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে মাত্র ৪৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন হয়েছে ৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। অন্যদিকে শেয়ারের দাম কমেছে ১৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৩ টাকা ৭০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৮০ পয়সায়, যা তার আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ১৯ টাকা ৫০ পয়সা। নানা অনিয়মে জড়িত থাকা অবস্থাতেই ২০১২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় পদ্মা ইসলামী লাইফ। তালিকাভুক্তির বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে ৮ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। এরপর টানা তিন বছর কোন লভ্যাংশ না দিয়ে ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। এরপর ২০১৭ সালে আবারও কোন ধরনের লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। একদিকে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়া অন্যদিকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ধুঁকতে থাকা পদ্মা ইসলামী লাইফের মালিকানা ২০১৮ সালে গোপনে পরিবর্তন হয়ে যায়। গোপনে জীবন বীমা কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা তাদের সব শেয়ার দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেন। আইন লঙ্ঘন করেই প্রতিষ্ঠানটির ১৭ উদ্যোক্তা ও পরিচালক’র হাতে থাকা প্রায় ৪২ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেয়া হয়। গোপনে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন ও ছেলে আহসানুল আলম এবং তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এফিনিটি এসেস্টস লিমিটেড, ক্রেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, প্যাভিলিয়ন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, ইউনিটেক্স পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও ইউনিটেক্স এলপি গ্যাস লিমিটেডের নামে পদ্মা ইসলামী লাইফের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের নামে শেয়ার কিনে নেয়া হয়। দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর হাতে মালিকানা গেলেও ভাগ্যের বদল হয়নি পদ্মা ইসলামী লাইফের শেয়ারহোল্ডারদের। আগের বছরের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেও কোম্পানিটির পরিচালকরা কোন ধরনের লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পদ্মা ইসলামী লাইফের পরেই গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর তালিকায় ছিল আইএফআইএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড-১। সপ্তাহজুড়ে এই ফান্ডটির ইউনিটের দাম কমেছে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে তাল্লু স্পিনিং। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ। এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, রূপালী লাইফের ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান:স্কিম’র ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং মিথুন নিটিংয়ের ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ দাম কমেছে। এমএএস/জেএইচ/এমকেএইচ
Advertisement