অর্থনীতি

ছয় হাজার কোটি টাকা মূলধন হারিয়েছে ডিএসই

আবারও দরপতনের খপ্পরে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের পাঁচ কর্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এসই সঙ্গে ৬ হাজার কোটি টাকার উপরে বাজার মূলধন হারিয়েছে ডিএসই।

Advertisement

সূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন কমেছে ১২ শতাংশের উপরে। আর বাজারটির প্রধান মূল্য সূচক কমেছে প্রায় দুই শতাংশ। বাজার মূলধনও প্রায় দুই শতাংশ কমেছে।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ৭ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ টানা দুই সপ্তাহের পতনে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে ডিএসই।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১০৪টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ২৩৩টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির।

Advertisement

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার ফলে ডিএসইর সব সূচকও কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১৪১ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৪১ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৪৯ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭০ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ১৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ২৩ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৪৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৫৪ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ১২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

Advertisement

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৭৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ২৪৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ২৭০ কোটি ২২ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ ছাড়া মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ ছিল ‘বি’ গ্রুপের দখলে। মোট লেনদেনে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর ‘এন’ গ্রুপের অবদান ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ১০৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ৬৩ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুন্নু জুট স্টাফলার্স।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- ফরচুন সুজ, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যাল, জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিসিন ডিভাইস লিমিটেড, ওয়াটা কেমিকেল, বিকন ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড।

এমএএস/এনডিএস/পিআর