খুলনার দাকোপ উপজেলার কামারখোলা ইউনিয়নের পূর্ব ভিটেভাঙা ঢাকী নদী ও সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী গ্রামের শিবসা-সুতারখালী নদীর মোহনা এলাকায় নদী ভাঙন কবলিত ২টি স্থানে প্রায় একশ গজ ওয়াপদা বেড়িবাঁধ নদী গর্ভে বিলেন হয়েছে।
Advertisement
ভাঙনকবলিত দুটি এলাকায় শতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। গত তিন দিনেও বেড়িবাধ সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এ নদী ভাঙনের ফলে অনেকে পার্শ্ববর্তী বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে ওই বাঁধ দ্রুত সংস্কারে দাবী জানিয়েছেন ইউনিয়নবাসী। তারা বলেন, পাশদিয়ে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণ না করা হলে যেকোনো মুহূর্তে আইলারমত ভয়াবহ পরিস্থিতি আবারও দুইটি ইউনিয়নের জনজীবনে নেমে আসতে পারে।
কামারখোলা ও সুতারখালী ইউনিয়নের স্থানীয় জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে স্থানীয় নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক অপেক্ষা ৪ থেকে ৫ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে গত বুধবার ভোরে ৫নং সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী গ্রামের শিবসা-সুতারখালী নদীর মোহনা বৃহস্পতিবাজারের কোনা ওয়াপদা বেড়িবাঁধের প্রায় ৫০ গজ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীন পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় কালাবগী গ্রামের ৭০টি পরিবার সম্পূর্ণ ভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীর পানিতে ভেসে গেছে প্রায় অর্ধশত বাগদা চিংড়ির ঘের ও শতাধিক পুকুরের সাদা মাছ এবং তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজতলা।
Advertisement
অপরদিকে কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডল জানান, কামারখোলা ইউনিয়নের বুধবার দুপুরে পূর্ব ভিটেভাঙা এলাকায় ঢাকী নদীতে ৫০ মিটার ওয়াপদা বেড়িবাধ নদী গর্ভে বিলেন হয়েছে। এলাকার ৩শত বিঘা আমন ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ওই গ্রামের ৩০টি পরিবার পানি বন্দির কারণে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এ স্থানের বাঁধটি দ্রæত সংস্কার করা হলে নদীর জোয়ারের তোড়ে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের বাকি অংশ ঢাকী নদীতে বিলীন হয়ে দুইট ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে আইলারমত ভয়াবহ পরিস্থিতি মানুষের জীবনে নেমে আসতে পারে।
বুধবার বিকালে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান গৌরপদ বাছাড় সরজমিনে এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ইউনিয়ন বাসীদের রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কথা বলেছেন। সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির জানান, ভোরবেলা বাধঁটি ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনা স্থলে ছুটে যায়ে বাঁধটি কোন রকমে সংস্কার করেছি। বাধঁটি আবারও যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই ওই বাঁধটির পাশ দিয়ে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ভেঙে যাওয়া বাঁধ ২টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যাক্ত বাঁধ। ওই বাঁধের ভিতরে আমাদের রিয়টায়েড বাঁধ রয়েছে। এই মুহুর্তে বাঁধ ২টি সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন অর্থ বরাদ্ধ করতে পাড়ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ জানান, ভেঙে যাওয়া বাঁধটি সম্পর্কে আমি আমার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করিয়েছি। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,যেহেতু ভেঙে যাওয়া বাঁধ ২টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের রক্ষনা-বেক্ষণের দায়িত্বটাও তাদের। ওই বাঁধ দ্রুত সংস্কার বা বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
Advertisement
আলমগীর হান্নান/এমবিআর/এমএস