কোন খাবারে অ্যালার্জি থাকতে পারে আর কোনটি নিশ্চিন্তে খাওয়া যাবে তাই নিয়ে চিন্তায় পড়েন অনেকেই। কিন্তু কোনো খাবারে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা হয় কি না তা বুঝতে হলে অন্তত একবার হলেও সেই খাবারটি খেতে হবে। কারণ আগ বাড়িয়ে কোনোভাবেই বলে দেয়া সম্ভব নয় যে কোন খাবারের কারণে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।
Advertisement
এমনকিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে মানুষের অ্যালার্জির সমস্যায় পড়ার হার বেশি। তবে সেটি যে সবার ক্ষেত্রেই ঘটবে এমন নয়। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো কথা যেগুলো খেলে অ্যালার্জির ভয় বেশি-
দুধ: প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য দুধের উপর নির্ভরশীল হতেই হয়। কিন্তু দুধ খেলে কারো কারো অ্যালার্জির সমস্যা হয়। বিশেষ করে গরুর দুধে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে আড়াই শতাংশ শিশুর গরুর দুধে অ্যালার্জি থাকে। দুধে অ্যালার্জি থাকা আর ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স কখনোই এক নয়। তবে ৩ বছরের উপরে এই এলার্জি কমতে থাকে এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে খুবই কম দেখা যায়।
ডিম: দুধের মতোই ডিমও একটি পুষ্টিকর ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। তবে ডিম খেলেও অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে। অধিকাংশ শিশুই দুধের মতোই ডিমের অ্যালার্জিতে ভোগে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডিমের সাদা অংশে থাকা প্রোটিন থেকে এই অ্যালার্জি হয়। যদি কারও ডিমের কারণে শরীরে এলার্জির সৃষ্টি হয়, তাদের ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
Advertisement
গাছ বাদাম: বাদাম খেতে কে না পছন্দ করে! বিভিন্ন ধরনের ডেজার্ট কিংবা এমনিতেই মুঠো মুঠো বাদাম খেতে বেশ লাগে। কিন্তু কাজু, পেস্তা, আমন্ড, আখরোট, ব্রাজিল নাট, এই ধরনের গাছ বাদাম খেলে অনেকেরই অ্যালার্জি হতে পারে। তবে কোনো এক ধরনের বাদামে অ্যালার্জি থাকা মানেই অন্য বাদামেও অ্যালার্জি হবে এমনটা নাও হতে পারে।
চিনা বাদাম: সব ধরনের বাদামের মধ্যে চিনা বাদাম সবচেয়ে বেশি পরিচিত। দুঃখের বিষয় হলো এই বাদামের কারণেও অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে খুব বাজেভাবে। শিশুদের মধ্যে প্রায়ই চিনা বাদামে অ্যালার্জি দেখা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে চিনাবাদাম এলার্জি ৪-৮ শতাংশ শিশু এবং ১-২ শতাংশ বয়স্কদের উপর প্রভাব ফেলে।
শেল ফিশ: শেল ফিশ নামের কোনো মাছকে চিনতে পারছেন না তাই তো? আসলে এ নামে কোনো মাছ নেই। বরং শেল ফিশ বলতে সেই ধরনের মাছকে বোঝায় যে মাছ শক্ত খোসা বা আবরণ দ্বারা ঢাকা থাকে। এ ধরনের মাছ থেকে অ্যালার্জি হওয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। বিভিন্ন প্রকারের শেল ফিশ যেমন চিংড়ি, কাঁকড়া, ওয়েস্টার, শামুক জাতীয় খাবার যার শক্ত খোল রয়েছে তার থেকেই অ্যালার্জি হয় বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের।
গম বা গমের আটার তৈরি খাবার: ভাতের পরপরই আটা দিয়ে তৈরি খাবার রয়েছে আমাদের প্রধান খাদ্যের তালিকায়। কিন্তু গমের আটা, পাউরুটি খেলে অ্যালার্জি অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। শিশুদের যদি গমে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে বার্লি বা অন্যান্য দানাশস্যের ক্ষেত্রেও সেই অ্যালার্জি দেখা যেতে পারে।
Advertisement
সয়াবিন জাতীয় খাবার: সয়াবিনে বড়দের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা না থাকলেও সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে সয়াবিন জাতীয় খাবার থেকে অ্যালার্জি দেখা যায়। সাধারণত সয়া বিনস, সয়া মিট এবং সয়া মিল্কে অ্যালার্জি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ১০ বছর বয়সের পর থেকে কমে আসে।
মাছ: কারও কারও ক্ষেত্রে কোনো এক বিশেষ প্রকার মাছে অ্যালার্জি থাকে, আবার অনেকের স্যালমন, টুনা, ম্যাকরলে জাতীয় সামুদ্রিক মাছ খেলে অ্যালার্জি হয়। আপনার যদি কোনো মাছে অ্যালার্জি থাকে তবে সেই মাছ এড়িয়ে চলা উত্তম।
এসব ছাড়াও বেশ কিছু ফল ও সবজি থেকে অনেকের অ্যালার্জি হয়। যেমন বেগুন, গাজর, টমেটো, পিচ ফল, কলা থেকেও অনেকেই অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন। কোনো খাবার থেকে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিলে তা অন্যের ক্ষেত্রেও অ্যালার্জির কারণ হবে, এমনটা নয়। তাই যে খাবারে আপনার অ্যালার্জি হয়, সেই খাবার খাওয়া থেকে আপনিই বিরত থাকুন। অন্যের সমস্যা না হলে তাকে খেতে বারণ করবেন না।
এইচএন/পিআর