বাদশাহী শাসন আমলে মুসাফিরদের জন্য বিনা মূল্যে খাবারের ব্যবস্থা থাকতো। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হতো। সে সময়ের মেহমানখানায় অভুক্ত পথিক পেট পুরে খেতে পারতেন। কালে কালে সেসব ঐতিহ্য পাল্টে যায়। মানুষ হয়ে ওঠে বিত্তশালী। শহরে শহরে গড়ে ওঠে হোটেল-রেস্টুরেন্ট।
Advertisement
অতীতের সেই রীতি বদলে গেলেও আধুনিক শহরের রাস্তায় এখনো অনেকেই ক্ষুধার্ত থাকেন। কিছু খাওয়ার সাহস হয় না তাদের। কারণ তখন পকেটে টাকা থাকে না। সেসব ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে দুবাইয়ের ‘ফুল ও হুমুস’ রেস্টুরেন্ট। যেখানে পকেটে টাকা না থাকলেও ক্ষুধা নিবারণে কোন বেগ পেতে হয় না।
জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ের ‘ফুল ও হুমুস’ রেস্টুরেন্ট অভুক্তকে বিনা মূল্যে খাবার পরিবেশন করে। দুবাইয়ের বার্শা শহরের এ রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ডে আরবি ও ইংরেজিতে লেখা রয়েছে, ‘আপনি যদি কিনতে না পারেন, তাহলে আপনার জন্য ফ্রি। আমাদের খাবার আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার জন্য উপহার।’
দুবাই ভিত্তিক গণমাধ্যম খালিজ টাইমস জানায়, হোটেলের মালিক ৩৯ বছর বয়সী ফাদি আইয়াদ জর্ডানের নাগরিক। তিনি ২০১১ সালে প্রথম বিনা মূল্যে খাবার দেওয়ার জন্য একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন। তারপর এ পর্যন্ত আরও তিনটি শাখা চালু করেন।
Advertisement
এখানে প্রতিদিন ৩০-৩৫ জনকে এ সেবা দেওয়া হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সপ্তাহে প্রতিদিনই এটি খোলা থাকে। যে কেউ প্রবেশ করে মেন্যু দেখে পছন্দমত খাবারের অর্ডার দিতে পারেন। চা, কফি ও পানিসহ সবকিছু এখানে বিনা মূল্যে পাওয়া যায়।
রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন দেশের নাগরিক খেতে আসেন। এমনকি এখানে অনেকেই নিয়মিত খেতে আসেন। অস্ট্রেলিয়ান এক নারী আর্থিক সমস্যার কারণে প্রতিদিন এখানে বিনা মূল্যে খেয়ে থাকেন। এছাড়া ক্ষুধার্তরা মূলত রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ডটি দেখেই আসেন। তাদের জন্য সব ধরনের খাবার ফ্রি।
রেস্টুরেন্টের মালিক ফাদি আইয়াদ বলেন, ‘বিনা মূল্যে সেবা দেওয়ার কারণে ব্যবসা আরও ভালোভাবে চলছে। যেহেতু আমার কিছু নৈতিক দায়িত্বও আছে। কারণ খাবার মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। আমরা চাই, অর্থিকভাবে অস্বচ্ছলরা ক্ষুধায় যেন কষ্ট না পায়।’
তিনি বলেন, ‘খাওয়ার পর ক্ষুধার্তদের হাসতে দেখে মনে পুলক অনুভব করি। তা টাকা-পয়সা দিয়ে কিনতে পাওয়া যায় না। এখানে যারা খেয়ে যান, তারা আবার আমাদের কাছেই আসেন। আমরা এ ধরনের ভালো কাজের প্রেরণা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাদের উৎসাহিত করি।’
Advertisement
এসইউ/জেআইএম