মশা নিয়ন্ত্রণে বরাদ্দ বাড়িয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৩০৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত নগর ভবনে এ বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
নতুন বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ থেকে ১৮২ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাতের সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
মশা নিয়ন্ত্রণে যন্ত্রপাতিতেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতির জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এ খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ ৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে এ খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে ২৫ শতাংশ।
Advertisement
ডিএনসিসির নতুন বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৩০৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে থেকে ১২৩৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৮২২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বেশি।
নতুন এ বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১১০৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের বছর থেকে ৩১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি। সরকারি অনুদান ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ছিল ৫৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সরকারি বিশেষ অনুদান ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর সরকারি অথবা বিদেশি সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫৬৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ৭০৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এবার ব্যয়ের ক্ষেত্রে শতাংশের হিসাবে বরাদ্দ সব থেকে বেশি বাড়ানো হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাক ও মটরসাইকেল এবং সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন খাতে। এ দুটি খাতেই বরাদ্দ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৯০০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাক ও মটরসাইকেল খাতে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। একই বরাদ্দ ধরা হয়েছে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন খাতে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ দুটি খাতের ব্যয় ধরা হয় ৫০ লাখ টাকা করে।
Advertisement
মৌলিক নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে অন্য যেসব খাতে ডিএনসিসি বরাদ্দ রেখেছে তার মধ্যে- প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা খাতের ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ধরা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। কল্যাণমূলক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ১১ কোটি টাকা।
এছাড়া নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৬ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বর্জ্য বিভাগের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
মশক নিয়ন্ত্রণে কোথায় কত ব্যয় হবে
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ডিএনসিসি মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য মোট ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছে, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে ছিল ২১ কোটি টাকা। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতের বরাদ্দ কমিয়ে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ডিএনসিসি মশা নিয়ন্ত্রণের বরাদ্দ প্রায় তিনগুণ বাড়িয়েছে। এবার মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিএনসিসি সব থেকে বেশি অর্থ ব্যয় করবে মশার ওধুষের জন্য। ওধুষের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা, যা গত বছরে ছিল ১৪ কোটি টাকা।
এছাড়া কচুরিপানা ও আগাছা পরিষ্কার-পরিচর্যার জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা গত বছর ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন পরিবহনের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা গত বছর ছিল ২ কোটি টাকা। পাশাপাশি এবার মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য দুই খাতে নতুন করে বরাদ্দ ধরেছে ডিএনসিসি। এর মধ্যে মশা নিয়ন্ত্রণ কর্যক্রমে বিশেষ কর্মসূচিতে ব্যয় করা হবে ১ কোটি টাকা। আর বাকি খাতটি হলো আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণ কর্যক্রম। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ কোটি টাকা।
এমএএস/জেডএ/এএইচ/জেআইএম