ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরিয়ে দেয়ায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ঝাক্কি ইমরান (৩৫) নামে এক যুবককে দিন-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
Advertisement
রক্তাক্ত শরীর নিয়ে বাঁচার জন্য চিৎকার করেছিলেন ঝাক্কি ইমরান। তবুও মন গলেনি তাদের। ইমরানের বাঁচার আকুতিতে সাড়া দেয়নি কেউ। স্থানীয়রা যতক্ষণে ঘটনাটি টের পেয়েছে তার আগেই ইমরানকে হত্যা করা হয়েছে।
তবে ইমরানকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুই যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। বুধবার দুপুর ২টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার বাঙালপাড়া গ্রামের ধানখেতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ঝাক্কি ইমরান নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কোয়ার্টার কলোনির টেনি মিয়ার ছেলে।
আটকরা হলেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কোয়ার্টার কলোনির কালু বাবুর্চির ছেলে সুমন (১৮) ও একই উপজেলার হাতিখানা এলাকার সৈয়দ আলীর ছেলে আকবর আলী (১৯)।
Advertisement
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ঝাক্কি ইমরান ভারতের সীমান্তে কৌশলে সুমনকে নিয়ে গিয়ে বিএসএফের হাতে ধরিয়ে দেন। ভারতের কারাগারে চার বছর জেল খেটে সম্প্রতি দেশে ফিরে আসেন সুমন।
এরই জেরে সুমনও কৌশলে ঝাক্কি ইমরানকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বাঙালপাড়া গ্রামে নানার বাড়ি বেড়াতে নিয়ে যান। সুযোগ বুঝে ঝাক্কি ইমরানকে বাঙালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিয়ে যান সুমন। সেখানে সুমন ও তার বন্ধু আকবর আলী ধারালো ছুরি দিয়ে ঝাক্কি ইমরানকে কুপিয়ে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে পালিয়ে যান।
এর আগে ধানখেত থেকে কেউ বাঁচার আকুতি জানিয়ে চিৎকার করেছিল এমন শব্দ এলাকাবাসীর কানে যায়। এলাকার লোকজন চিৎকারের শব্দ পেয়ে এগিয়ে এসে দেখে দুই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এ সময় তারা ধানখেতে এক যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। তখন ধাওয়া দিয়ে সুমন ও আকবর আলীকে আটক করে এলাকাবাসী। সঙ্গে সঙ্গে তাদের গণপিটুনি দিয়ে চিরিরবন্দর থানায় খবর দেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ও আটকদের থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চিরিরবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, নিহত ঝাক্কি ইমরানের মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
Advertisement
ওসি বলেন, ভারতের কারাগারে চার বছর জেল খেটে সম্প্রতি দেশে ফেরে সুমন। পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঝাক্কি ইমরান ভারতের সীমান্তে কৌশলে সুমনকে নিয়ে বিএসএফের হাতে ধরিয়ে দেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি আমরা। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এমদাদুল হক মিলন/এএম/এমএস