জাতীয়

বিরোধীদলীয় নেতার পদ পেতে দেবর-ভাবির লড়াই

জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ পেতে লড়াই শুরু করেছেন দেবর-ভাবি। দেবর জাতীয় পার্টির (জাপা) বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করে চিঠি দেয়ার পরদিনই বুধবার ভাবি রওশন এরশাদ নিজেকে ওই আসনে বসানোর জন্য স্পিকারকে চিঠি দেন। 

Advertisement

বুধবার বিকেলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানের লেখা চিঠিটি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে পৌঁছে দেন দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। 

সংসদের একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি মুজিবুল হক চুন্নু। তবে স্পিকারের দফতরের এক কর্মকর্তা চিঠিটি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। 

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মন্ত্রী এবং উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি-বিধি অনুযায়ী বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা নিয়োগ দেন স্পিকার।

Advertisement

এর আগের দিন মঙ্গলবার জাপার বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করে সংসদে চিঠি দেন দলের কয়েকজন। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে পাঁচ সংসদ সদস্য স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে গিয়ে এই চিঠি দেন। চিঠিতে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয় রওশন এরশাদকে। 

জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরই দলটির কে হবেন চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, তা নিয়ে শুরু হয় রশি টানাটানি। দলের একটি পক্ষ ইতোমধ্যে জিএম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যানের পদ দিয়েছেন। এতে নাখোশ রওশন ও তার অনুসারীরা। এরপর শুরু হয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ। এ মতবিরোধের মধ্যেই জিএম কাদেরের পক্ষে বেশির ভাগ এমপির স্বাক্ষর নিয়ে সংসদে চিঠি জমা দিলেন তারা। সংসদে এখন সংরক্ষিতসহ ২৫টি আসন আছে জাতীয় পার্টির। দলের প্রতিষ্ঠাতা এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন হবে। এর মধ্যে ১৫ জনের স্বাক্ষর নিয়ে চিঠি জমা দেন তারা।

দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম কাদের স্বাক্ষরিত স্পিকারকে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘মহাত্ম আপনার সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানাচ্ছি যে, মহান জাতীয় সংসদে বর্তমানে জাতীয় পার্টির প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে। আপনি নিশ্চিয় অবগত আছেন যে আমাদের দলের চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলের নেতা বিগত ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে ইন্তেকাল করেছেন। ফলে মহান জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা পদটি বর্তমানে শূন্য রয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং পার্টির সংসদীয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যরা, বিরোধী দলের নেতা হিসেবে ১৮ লালমনিরহাট-০৩ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত আমি গোলাম মোহাম্মাদ কাদেরকে মহান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রস্তাব করছে।’

‘অতএব উপরোক্ত বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম এবং পার্টির সংসদীয় দলের মনোনীত সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে আমাকে নিয়োগ দানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’

Advertisement

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আদেলুর রহমান, নাজমা আক্তার, শরিফুল ইসলাম ও জিন্না।

স্বামী এরশাদ জীবিত থাকা অবস্থায়ই স্ত্রী রওশন ও ভোট ভাই কাদেরের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। আর এর পেছনে দলের পদপদবি। যা সামাল দিতে দুজনের পদে নানা পরিবর্তন আনতে হয়েছিল এরশাদকে।কিন্তু এরশাদ মারা যাওয়ার পর তাদের দ্বন্দ্ব আরো প্রকট আকার ধারণ করে। 

এইচএস/জেএইচ/পিআর