যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের বানিয়াবুহ গ্রাম যেন ডেঙ্গুর গ্রাম। এলাকাবাসীর দাবি, ডেঙ্গুতে ওই গ্রামের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড়শ।
Advertisement
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিল সংলগ্ন গ্রাম হওয়ায় সম্প্রতি বানিয়াবুহ ও এড়েন্দা গ্রামে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই দুই গ্রামের প্রায় দেড়শ মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
ওই গ্রামে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অনেক রোগী থাকলেও তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে ওই গ্রামের অনেক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসায় বিষয়টি নজরে এলে সম্প্রতি সরেজমিন ওই গ্রাম পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। তিনি গ্রামবাসীর সার্বিক খোঁজ-খবর নেন। এলাকাবাসী তার কাছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৩৯ জনের তালিকাও দিয়েছে।
Advertisement
গ্রামবাসীর পক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য মঞ্জুরে মাহবুব অভিযোগ করেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে ঠিকমতো রক্ত পরীক্ষা করাতে পারছেন না। তাদেরকে হয়রানি করে প্রকারান্তে ক্লিনিকে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। দুপুর ১২টার পর কোনো রোগী গেলে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে না। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর সময় উত্তীর্ণের কারণে অনেককে ফিরে আসতে হচ্ছে। এছাড়া সরকারি এ হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করলে ফলাফল দুই তিনদিন বা তার অধিকতর দিন পরে দেয়া হচ্ছে যেখানে প্রাইভেট ক্লিনিকে দেয়া হচ্ছে দুই ঘণ্টায়। যে কারণে সরকারি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষার বিড়ম্বনায় রোগীর চিকিৎসা গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে।
পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ তৎক্ষণাৎ সিভিল সার্জন ডাক্তার দিলীপ কুমার রায়কে মুঠোফোনে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমস্যার আশু সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপর গ্রামবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের আর্থিক সহায়তায় বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এ সময় যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ এডিস মশার লার্ভা নিধনসহ আক্রান্তদের মশারী ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করেন। এরপর জেলা প্রশাসক গ্রামবাসীদের অংশগ্রহণে পতিত জলাবদ্ধ স্থানে স্বেচ্ছাসেবায় কীটনাশক ছিটানো কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকবে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ বিশ্বাস।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক নূর-ই-আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইব্রাহীম, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ জাকির হাসান।
Advertisement
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, ‘বিল সংলগ্ন গ্রামটিতে জলাবদ্ধতার কারণে এডিস মশার বিস্তার ঘটেছে। এজন্য শতাধিক মানুষ ডেঙ্গ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তিনজন ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছেন, বিষয়টি সঠিক নয়।’
মিলন রহমান/এমবিআর/এমকেএইচ