মিয়ানমারের রাখাইনে নৃশংস রোহিঙ্গা হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সেনাসদস্যদের বিচার মার্শাল কোর্টে শুরুর কাজ প্রক্রিয়াধীন। রাখাইনে নৃশংস হত্যা চালানোর দুই বছর পর এ ঘটনায় একটি তদন্ত শেষে এই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে বলে শনিবার দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধানের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
Advertisement
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের হামলায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৩০ সদস্যের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত সামরিক অভিযান পরিচালনা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এই অভিযানের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।
মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর একটি আদালত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাখাইন সফর করেছেন। সেখানে একটি গ্রামের কিছু ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালনে দুর্বলতা দেখিয়েছেন।
যে গ্রামটিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে দুর্বলতার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০১৮ সালে মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি রাখাইনে অন্তত পাঁচটি গণকবরের সন্ধান পায়। বুথিডং শহরের গু দার পিন গ্রামের এসব গণকবর থেকে ১৯ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
সেই সময় এপির প্রতিবেদনে রাখাইনের গ্রামে গ্রামে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের নৃশংস সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়। বন্দুক, ছুরি, রকেট লাঞ্চার ও গ্রেনেড নিয়ে গ্রামে হামলা চালায় সেনা সদস্য ও উগ্র বৌদ্ধরা। হামলার পর রোহিঙ্গাদের মরদেহ এসিডে ঝলসে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলেছেন, শত শত রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষকে হত্যা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। কিন্তু ওই সময় দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, মাত্র ১৯ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন এবং তাদের মরদেহ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দাফন করা হয়েছে।
রোববার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র তুন তুন নি রয়টার্সকে বলেছেন, অনসন্ধানে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত অত্যন্ত গোপনীয়। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে জানার সুযোগ নেই। বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হলে তারা আরো একটি বিবৃতি প্রকাশ করবেন বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা।
এসআইএস/জেআইএম
Advertisement