দেশজুড়ে

বিএনপি নেতার হামলায় আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

নরসিংদীর চরাঞ্চলের নজরপুরে ফুটবল খেলায় প্রধান অতিথি হওয়াকে কেন্দ্র করে বিএপি নেতার সন্ত্রাসীদের হামলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান রাজা মিয়া জনির (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২৮ আগস্ট বুধবার রাতে তাকে কুপিয়ে আহত করে বিএনপি নেতা ও তার দলীয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার জনির ভাই শাহিন মিয়া বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন, নজরপুর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে ছগির মিয়া (৩৫), কবির মিয়া (৩০) ও সেলিম খাঁর ছেলে রমজান মিয়া (৩৫)।

Advertisement

নিহতের লাশ বিকেলে নিজ গ্রামে পৌঁছালে শত শত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও গ্রামবাসীর ঢল নামে। এসময় নেতাকর্মীরা তার হত্যার বিচার ও হত্যার সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর গ্রেফতার দাবি করেন। নিহত রাজা মিয়া জনি নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নজরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, ঈদুল আযহার পর নবীপুরা মাঠে এক ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। খেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান বাদল সরকারকে প্রধান অতিথি করায় ক্ষিপ্ত হয় এলাকার মেম্বার ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আদম আলী। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ আগস্ট বুধবার বিকেলে জনি তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে দলের জেলা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জেলা ও শহর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় অংশ নেন।

সভা শেষ হওয়ার একটু আগেই তিনি একা নিজ বাড়ি নজরপুর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামে ফিরছিলেন। রাত ৯টার দিকে নবীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও তার দলীয় সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিহত জনির ছোট ভাই শাহিন মিয়া বলেন, ঈদুল-আযহার পর নবীপুরা মাঠে এক ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। খেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান বাদল সরকারকে প্রধান অতিথি করায় ক্ষিপ্ত হয় এলাকার মেম্বার ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আদম আলী। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করি।

এ ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় পরিণত হবে।

সঞ্জিত সাহা/এমএএস/জেআইএম

Advertisement