আল্লাহ তাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন মানুষের জন্যই নাজিল করা হয়েছে। কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে মানুষের কর্তব্য। আর এ কারণেই কুরআনের আলোচ্য বিষয়ও মানুষ।
Advertisement
যাতে মানুষ কুরআনের আলোকে জীবন সাজাতে পারে। কুরআনের আলোকে প্রতিটি দিন ও রাত সাজাতে পারে। তাই কুরআন ও হাদিসের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী মুমিন তার প্রতিটি দিন ও রাত যে কাজে অতিবাহিত করবেন তার একটি তালিকা তুলে ধরা হলো-
>> নিয়মিত ফরজ নামাজ আদায় করবে। সঙ্গে নফল নামাজের গুরুত্বও বেশি। তবে এর মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া সর্বোত্তম।>> বেশি বেশি কুরআন অধ্যয়ন ও আল্লাহর জিকির করবে।>> গরিব-দুঃখীর মাঝে দানের হাত প্রসারিত করে দেবে।>> আল্লাহর কাছে নিজের গোনাহের জন্য একনিষ্ঠ মনে অনুতাপসহ ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
>> অযথা ফাহেশা তথা খারাপ কথা বলা থেকে বিরত থাকবে।>> প্রয়োজনের বেশি না ঘুমানো। অতিরিক্ত ঘুমের কারণে যাতে দিন ও রাতের মূল্যবান সময় নষ্ট না হয়। রিজিক অন্বেষণ ও নামাজ যেন ছুটে না যায়।>> রমজানের ফরজ রোজা পালনের পাশাপাশি সুন্নাত ও নফল রোজা পালন করবে। সম্ভব হলে প্রত্যেক সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখবে। অন্ততঃ প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩-১৫ তারিখের রোজা রাখবে। আশুরা, ইয়াওমে আরাফা, জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিনসহ শাবান মাসে নফল রোজা পালন করবে।>> খাবার গ্রহণে সুন্নাত নিয়মের প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি। যাতে কোনো খাবার নষ্ট না হয় আবার নিজের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হয়।>> কাজে কর্মে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ তাড়াহুড়ো করে কাজ করলে তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা যেমন বেশি তেমিন তাড়াহুড়ো করায় ভুল ও ক্ষতির সম্ভাবনাও বেশি।
Advertisement
>> উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও বিষন্নতা পরিহার করে শান্ত ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা আবশ্যক। এসব অবস্থায় বিশ্বনবিরে শেখানো পন্থা ‘সবর ও দোয়া করা।>> প্রয়োজন ছাড়া গভীর রাত পর্যন্ত না জেগে থেকে সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়া এবং সম্ভব হলে মধ্য রাতের পর ওঠে নামাজ ও জিকিরে কিছু সময় অতিবাহিত করা।>> জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখা জরুরি। ঘুম, খাবার গ্রহণ ও কাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।>> জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মিথ্যা পরিত্যাগ করা আবশ্যক। কেননা মিথ্যা সব পাপের উৎস।>> অর্থহীন তর্ক-বির্তক, হট্টগোল কোনোভাবেই করা যাবে না। যাতে নিজের ও অন্যের ক্ষতি হয়।
>> জিনা-ব্যভিচার, লজ্জাহীনতা থেকে বেঁচে থাকা। কেননা এগুলো চরম ও নিকৃষ্ট অপরাধ।>> প্রতিটি কাজে প্রতিটি মূহূর্তে ন্যায়-নীতি বজায় রেখে কর্তব্যপরায়ন ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রাখা একান্ত আবশ্যক।>> সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা ও আমানতদারির যথাযথ কদর করা। এ সব বিষয়ে অন্যায়ের সঙ্গে কোনো ভাবে আপোষ করা যাবে না।>> প্রত্যেককেই নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি যথাযথ মর্যাদা দেয়া এবং দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। তবে জবাবদিহিতামূলক সমাজ তৈরি হবে।>> জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একে অপরের প্রতি ক্ষমাশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা এবং সদয় হওয়া।>> সর্বোপরি ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি বিষয়ে সাধ্যমত সদয় অনুভূতি ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা।
উল্লেখিত কাজগুলো যথাযথ পালন করতে পারলেই আসবে দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তি। তৈরি হবে সুন্দর সোনালী সমাজ। আল্লাহর কাছে প্রত্যেক বান্দাই হবেন পরম সম্মানিত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে উল্লেখিত কাজগুলো যথাযথভাবে পালন করে সুন্দর জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Advertisement
এমএমএস/পিআর