বিশেষ প্রতিবেদন

ভিভিআইপি মুভমেন্টের ৫০ কিমি’র মধ্যে ড্রোন নিষিদ্ধ হচ্ছে

>> বেসামরিক ড্রোন রাতে পরিচালনা করা যাবে না>> বিমানবন্দরের ৫ কিলোমিটার মধ্যে ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ >> উড্ডয়ন নিষিদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যেও>> অননুমোদিত আমদানি-উড্ডয়ন হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ

Advertisement

কঠোর বিধি-বিধানের আওতায় আসছে ড্রোনের (ক্ষুদ্রাকার রোবট প্লেন) ব্যবহার। এজন্য ‘ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা, ২০১৯’ খসড়া প্রণয়ন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে ড্রোন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছ থেকে নিতে হবে ড্রোনের নিবন্ধন। আমদানির জন্য নিতে হবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি।

বিশেষ অনুমতি ছাড়া বেসামরিক ড্রোন রাতে পরিচালনা করা যাবে না। ড্রোন উড্ডয়নের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ভিভিআইপি মুভমেন্ট (রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চলাচল) থাকলে একদিন আগে থেকে ভিভিআইপি মুভমেন্ট সম্পূর্ণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ড্রোন উড্ডয়ন বন্ধ রাখতে হবে। বিমানবন্দরের ৫ কিলোমিটার এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ থাকবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী কৃষিকাজ ও কৃষির উন্নয়ন, আবহাওয়ার তথ্যাদি সংগ্রহ এবং পরিবেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ফসলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, মশার ওষুধ বা কীটনাশক স্প্রে, বিভিন্ন প্রকার সার্ভে, চিত্র ধারণ ও চলচ্চিত্র নির্মাণ, জরুরি সাহায্য প্রেরণ, গবেষণা কার্যক্রম, নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি কাজে আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল (ইউএভি) বা আনম্যান্ড এয়ারক্র্যাফট সিস্টেম (ইউএএস) বা রিমোটলি পাইলটেড এয়ারক্র্যাফট সিস্টেম (আরপিএএস) বা ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত সরকারি-বেসরকারি বা সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন পর্যায়ে এগুলোর ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে সামরিক বাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব এবং দেশের নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায়ও এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরকারি, বেসরকারি, ব্যক্তিগত কাজে ড্রোনের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বা নিরাপত্তা ভঙ্গ এবং জনসাধারণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির মতো অনৈতিক, বেআইনি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এ প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে এর আমদানি, ব্যবহার ও উড্ডয়ন অত্যন্ত সীমিত ও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। কোনো নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ড্রোন উড়ানোর জন্য হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে অনেক ড্রোন আটক করা হয়েছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘বিভিন্ন ভালো কাজ ও রাষ্ট্রীয় বহুবিধ উন্নয়ন নিরাপত্তার কাজে ব্যবহারের প্রয়োজনে ড্রোনের আমদানি, ব্যবহার ও উড্ডয়নের সুনিয়ন্ত্রিত অনুমোদন দেয়া এখন সময়ের চাহিদা। এজন্য ইউএভি বা ইউএএস বা আরপিএএস বা ড্রোনের আমদানি, ব্যবহার ও উড্ডয়ন সুনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে নিষ্পত্তিতে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘খসড়া প্রণয়নের পর আমরা সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে বসেছিলাম। সবার মতামত অনুযায়ী নীতিমালাটি আমরা এখন কিছুটা পরিমার্জন করছি। কারেকশনটা (সংশোধন) হয়ে গেলে আমরা আবার আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং করব। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে একটা মিটিং হয়তো হবে। আমরা আশা করছি, সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফাইনাল ড্রাফটা আমরা করে ফেলতে পারব। এরপর হয়তো এটা মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।’

Advertisement

ব্যবহারের ভিত্তিতে ড্রোনের শ্রেণি

খসড়া নীতিমালায় ড্রোনকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। ‘ক’ শ্রেণি-বিনোদনের জন্য ব্যবহার। ‘খ’ শ্রেণি-শিক্ষা ও গবেষণার মতো অবাণিজ্যিক কাজে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ব্যবহার। ‘গ’ শ্রেণি-সার্ভে, ছবি তোলা, চলচ্চিত্র নির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ইত্যাদি বাণিজ্যিক ও পেশাদার কাজে ব্যবহার। ‘ঘ’ শ্রেণি-রাষ্ট্রীয় বা সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার।

ড্রোন উড্ডয়নের সাধারণ শর্ত

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বেবিচকের বিশেষ অনুমতি ছাড়া বেসামরিক ড্রোন রাতে (সূর্য অস্ত ও উদয়ের মধ্যবর্তী সময়ে) পরিচালনা করা যাবে না। বেবিচকের এএনও (এয়ার নেভিগেশন অর্ডার) অনুযায়ী, নির্ধারিত গতি ও আবহাওয়ায় ড্রোন পরিচালনা করতে হবে। ড্রোন উড্ডয়ন কোনো সম্পত্তি বা নিরাপত্তার জন্য হুমকি কিংবা ক্ষতির কারণ হতে পারবে না।

নীতিমালায় নির্ধারিত নির্দিষ্ট শ্রেণির ড্রোন বেবিচকের নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে নিবন্ধিত হবে। এজন্য বেবিচক প্রতিটি ড্রোনের জন্য একটি নিবন্ধন নম্বর বা পরিচিতি নম্বর দেবে এবং বেবিচকের ইলেকট্রনিক তথ্য ভাণ্ডারে তা সুরক্ষিত থাকবে। নিবন্ধন নম্বর বা পরিচিতি নম্বর নিবন্ধিত ড্রোনের গায়ে লিপিবদ্ধ করতে হবে। এ নীতিমালায় নির্ধারিত নির্দিষ্ট শ্রেণির ড্রোনে বেবিচকের এএনও অনুযায়ী জিও লোকেশন ট্র্যাকিং বা মনিটরিং সুবিধা সংযুক্ত থাকতে হবে। উড্ডয়নকালে বেবিচক ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বা সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনে ওই ড্রোন ট্র্যাকিং বা মনিটরিংয়ের জন্য সার্বিক সহযোগিতা দিতে হবে।

ড্রোন আমদানি

সরকারের আমদানি নীতিমালা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত পদ্ধতিতে ড্রোন আমদানি করতে হবে। ‘ক’ শ্রেণি ছাড়া অন্য যেকোনো শ্রেণির ড্রোনের ক্ষেত্রে, আমদানির আগেই ড্রোনের স্পেসিফিকেশন এবং যে কাজে ও স্থানে ড্রোন ব্যবহৃত হবে তা উল্লেখসহ প্রতিটি ড্রোনের জন্য ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র ইস্যুর ছয় মাসের মধ্যে অনুমোদিত স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ড্রোন আমদানি করা যাবে। আমদানি-পরবর্তী সময়ের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্য কোন নির্দেশনা থাকলে তা প্রতিপালন করতে হবে। ব্যবহার অথবা ওজনের ভিত্তিতে প্রতিটি ড্রোন (সংশ্লিষ্ট রিমোট পাইলট স্টেশনসহ) আমদানি শুল্ক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত হবে এবং ক-শ্রেণি (বিনোদনের জন্য ষোষিত এবং নির্ধারিত ওজনের মধ্যে) ছাড়া সব ড্রোনের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি থাকা-সাপেক্ষে আমদানি ছাড়করণের অনুমতি দেবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির কপি ও অনুমোদিত স্পেসিফিকেশনের কপিসহ কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রযোজ্য শুল্ক পরিশোধ করে খ, গ ও ঘ শ্রেণিভুক্ত ড্রোন আমদানি করা যাবে। এ সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির মূল কপি ও অনুমোদিত স্পেসিফিকেশনের মূল কপি প্রদর্শনে আমদানিকারী বাধ্য থাকবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত স্পেসিফিকেশনের বাইরে কোনো ড্রোন আমদানি করা যাবে না।

ড্রোন নিবন্ধন

‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির ড্রোন আমদানির ১২০ দিনের মধ্যে বেবিচকের নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে আবেদন করে ড্রোনের নিবন্ধন ও পরিচিতি নম্বর গ্রহণ করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ড্রোন আমদানি ও নিবন্ধনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান একই হতে হবে। তবে নিবন্ধনকালে ড্রোন অপারেটরের নাম হিসেবে ভিন্ন নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। ওই ড্রোনের সব দায়-দায়িত্ব অপারেটর ও রিমোট পাইলটের ওপর থাকবে, তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে এর দায়-দায়িত্ব আমদানিকারী বা নিবন্ধনকারীকেও বহন করতে হবে।

‘ক’ শ্রেণির ছাড়া প্রতিটি ড্রোনের জন্য বীমা করতে হবে এবং বীমার সমর্থনে কাগজপত্র বেবিচকের কাছে জমা দিতে হবে।

‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির ড্রেনের রিমোট পাইলট টেশন এবং ড্রোনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী ফ্রিকোয়েন্সি অন্যকোনো গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থার (রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল, স্যাটেলাইট, এভিয়েশন ইত্যাদি) জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নয় বলে বিটিআরসির প্রত্যয়ন সংগ্রহ করতে হবে।

এ নীতিমালায় বর্ণিত উড্ডয়নের ক্ষেত্র ছাড়া অন্যান্য বেসামরিক এলাকায় সকল শ্রেণির ড্রোনের উড্ডয়নের জন্য বেবিচকের অনুমোদন নিতে হবে। ড্রোন উড্ডয়নের অনুমতি প্রদান ও অনুমোদন পাওয়ার পর উড্ডয়নকালে অপারেটর, রিমোট পাইলটের যোগ্যতা ও অনুসরণীয় নির্দেশনাগুলো বেবিচক নির্ধারণ করবে।

যেকোনো খোলা স্থানে যেকোনো শ্রেণির ড্রোন উড্ডয়নের আগে অপারেটর ও রিমোট পাইলট ওই এলাকার ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ভিভিআইপি মুভমেন্ট রয়েছে কি-না, সে বিষয়টি নিজ দায়িত্বে জেনে নিতে হবে। ভিভিআইপি মুভমেন্টের তারিখ থেকে একদিন আগে এবং ভিভিআইপি মুভমেন্ট সম্পূর্ণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ড্রোন উড্ডয়ন বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। যেকোনো খোলা স্থানে সভা বা সমাবেশ এবং জাতীয় বা আন্তর্জাতিক খেলা বা ইভেন্ট চলাকালীন ওই স্থানের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে শুধুমাত্র ওই সভা সমাবেশ ও জাতীয় আন্তর্জাতিক খেলা বা ইভেন্টের জন্য বেবিচক অনুমোদিত ড্রোন ছাড়া অন্য কোনো শ্রেণির ড্রোনের উড্ডয়ন নিষিদ্ধ থাকবে।

অননুমোদিত ড্রোন আমদানি-উড্ডয়নের শাস্তি

নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে, কিংবা বেবিচকের অনুমতি ছাড়া ড্রোন উড্ডয়ন করা হলে বা অননুমোদিতভাবে সেটি আমদানি করা হলে পুলিশ নিজ উদ্যোগে বা পুলিশের সহযোগিতায় বেবিচক ও সরকারী নিরাপত্তা বা গোয়েন্দা সংস্থা ড্রোন উড্ডয়ন বন্ধসহ উড্ডয়নকারী ব্যক্তিকে আটক করতে পারবে। অননুমোদিতভাবে ড্রোন উড্ডয়ন বা আমদানিকারী, আমদানির জন্য অনুমোদিত স্পেসিফিকেশনের পরিবর্তনকারী, নীতিমালা বা বেবিচকের শর্ত ভঙ্গ করে ড্রোন উড্ডয়নকারী এবং ড্রোন উড্ডয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়, জননিরাপত্তা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা ভঙ্গকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা অপারেটর দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য হবেন।

ড্রোন উড্ডয়নের কারণে জনসাধারণ ও প্রাণীর জীবন, জনসাধারণের সম্পত্তি ও গোপনীয়তা এবং রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ও সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতির অভিযোগে দেশের প্রচলিত আইনে দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিচারযোগ্য ও দণ্ডনীয় হবে এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

নীতিমালায় চার ধরনের ড্রোনের ওজন, উড্ডয়ন উচ্চতা, উড্ডয়নের শর্ত ও স্থানের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।

আরএমএম/এমএআর/এমএস