পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট কাটতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আজও ছিল ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো চলছে আগাম টিকিট বিক্রি। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় কাউন্টার খোলা হলেও বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই কমলাপুরে এসে জড়ো হতে থাকেন টিকিট প্রত্যাশীরা। আজ তৃতীয় দিনে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট দেয়া শুরু হওয়ার পর ধীর গতির অভিযোগ তুলেন অনেক যাত্রী। আবার দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে টিকিট হাতে পেয়ে সব কষ্ট ভুলে যান যাত্রীরা। আজ দেয়া হচ্ছে ২২ সেপ্টেম্বরের টিকিট। সকাল নয়টা থেকে শুরু হওয়া এ টিকিট বিক্রি চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। একজন টিকিট প্রত্যাশী সর্বোচ্চ চারজনের টিকিট কিনতে পারবেন। বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলস্টেশনের সব কয়টি কাউন্টারের সামনে ছিলো ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অনেকেই রাত থেকেই কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘ দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট হাতে পেয়ে আনন্দ করতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীকে। সকাল ৯টায় একযোগে ২০টি কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রয় শুরু হয়। রাজধানী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব রুটের টিকিট অগ্রিম বিক্রয় চলছে। রেল পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় এবার টিকিট কালোবাজারি কঠোর ভাবে দমন করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কমলাপুরে র্যাব-৩ এর অস্থায়ী ক্যাম্পের সদস্যরা ৫ টিকিট কালোবাজারিকে গ্রেফতার করেন। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই কমলাপুর রেল স্টেশনে অপেক্ষারত টিকিট প্রত্যাশীদের লাইনে দাঁড়ানোর উন্মুক্ত স্থানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলে ব্যবস্থা না রাখায় প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়েন টিকিট নিতে আসা যাত্রীরা। তবে সব কষ্ট ভুলে যখন একটি টিকিট হাতে আসে তখন অনেকের চোখেমুখে ফুটে ওঠে বিজয়ের আনন্দ। এদিকে, টিকিট কালোবাজারি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদ উপলক্ষে ১৮ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বরের এবং ১৯ তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বরের টিকিট দেয়া হবে। মোট ১৪ হাজার ৬`শ ৩৩টি টিকিট দেয়া হচ্ছে কমলাপুর থেকে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ দেয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। বাকি টিকিটের ২৫ শতাংশ অনলাইন এবং ভিআইপি ও রেলের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য পাঁচ শতাংশ করে বরাদ্দ রয়েছে। এদিকে, টিকিট বিক্রি স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। পুরো স্টেশন এলাকা ৩২টি সিসি টিভি ক্যামেরা ও রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব-পুলিশ ও জিআরপি`র অস্থায়ী ক্যাম্পের মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মজিদ বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ ও ভিডিওচিত্র দেখে সন্দেহজনক ব্যক্তির গতিবিধির ওপর নজরদারি রাখা যাবে। কালোবাজারিরা কোনোভাবেই যেন এক জনের টিকিট অন্যজনের কাছে বিক্রি করতে না পারে সে জন্য টিকিটে যাত্রীর বয়স ও লিঙ্গ উল্লেখ করা হচ্ছে। ডিভিশনাল রেলওয়ের ম্যানেজার আরিফুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিন ১৪ হাজার ৬`শ ৩৩টি টিকিট দেয়া হয় কমলাপুর থেকে। তবে ঈদ উপলক্ষে যাত্রী সংখ্যা বেশি। এবার প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার মানুষ যাতায়াত করছে।তিনি বলেন, ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের সম্ভাব্য কারণ সনাক্ত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। আশা করছি এবার ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হবে না।জেইউ/এসকেডি/পিআর
Advertisement