বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সঙ্গে কারাগারে দেখা করেছেন তার আইনজীবী। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মিন্নির সঙ্গে দেখা করার জন্য আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম কারাগারে প্রবেশ করেন। এরপর মিন্নির সঙ্গে দেখা করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি কারাগার থেকে বের হন।
Advertisement
মাহবুবুল বারী আসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মিন্নির সঙ্গে আমার দুটি বিষয়ে কথা হয়েছে। উচ্চ আদালত মিন্নির জামিনের আদেশ দিয়েছেন। এ আদেশ অনুযায়ী কারাগার থেকে মিন্নির মুক্ত হতে আরও কয়েকটি আইনি প্রক্রিয়া ও দাফতরিক কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এ আইনি প্রক্রিয়া ও দাফতরিক কাজ সম্পন্ন হতে দু-চারদিন সময় লাগবে। এজন্য মিন্নি যাতে হতাশাগ্রস্ত না হন, এটা আমি মিন্নিকে বুঝিয়ে বলেছি।
তিনি আরও বলেন, মিন্নির জামিন আদেশে গণমাধ্যমে কথা না বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমে কথা বললে মিন্নির জামিন বাতিল হবে। তাই জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিন্নি যাতে কোনোভাবেই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলেন, বিষয়টি আমি মিন্নিকে বুঝিয়ে বলেছি।
আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ যদি আপিল করেন এবং আপিলের শুনানি হতে যদি সময় লাগে তাহলে আদালত মিন্নির জামিনের আদেশ স্থগিত করতে পারেন অথবা যদি আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে শুনানি হয় তাহলে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নামঞ্জুরও করতে পারেন। আবার মিন্নির জামিনে মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আদালত কোনো আদেশ না দিয়ে শুনানির দিন নির্ধারণ করতে পারেন। এগুলো সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়।
Advertisement
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় দুই শর্তে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। যে দুই শর্তে মিন্নিকে জামিন দেয়া হয়েছে তা হলো- মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না এবং তাকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে। জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে। কিন্তু মিন্নির শ্বশুর মামলার ১৮ দিন পর গত ১৩ জুলাই এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত এমন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করার পর মামলাটির তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়। পরে এ মামলায় গ্রেফতার করা হয় মিন্নিকে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ২ জুলাই এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
মিরাজ/আরএআর/জেআইএম
Advertisement