পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় বখাটের উৎপাত সইতে না পেরে রুকাইয়া রুপা (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ওই ছাত্রী ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে অচেতেন হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
নিহত রুকাইয়া রুপা উপজেলার ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী এবং ভান্ডারিয়া পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী মো. রুহুল মুন্সির মেয়ে। রুপা চার ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়।
রুপার বাবা রুহুল মুন্সি জানান, বিগত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত ও প্রেমের প্রস্তাব দিত নিজ ভান্ডারিয়া গ্রামের মঞ্জু খানের ছেলে তামিম খান (১৯)। এতে রাজি না হওয়ায় রুপার একটি ছবি এডিট করে তা বিভিন্নজনের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয় তামিম। শুক্রবার বিকেলে এক সহপাঠীর সঙ্গে প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার পথে পুনরায় পথ আটকে রুপাকে বিরক্ত করতে থাকে তামিম। তার সঙ্গে প্রেম না করলে এডিট করা ছবিটি সে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এরপর বাড়িতে ফিরে রুপা বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে তাকে জানালে তিনি রাতে বাড়ি ফিরে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে রুপাকে তার ঘরে ডাকতে পাঠালে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পাই। অনেক ডাকাডাকির পরও তার কোনো সাড়া না পাওয়ায় ঘরের দরজা ভেঙে তাকে ঘরের মধ্যে অচেতন অবস্থায় পাই। পরে জানতে পারি রুপা ঘরে থাকা ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না করে ডাক্তাররা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুপার মৃত্যু হয়।
Advertisement
রুপার বাবা বলেন,, পুলিশকে রাতেই বিষয়টি জানানো হলেও তারা তামিমকে আটক করতে পারেনি। রুপাকে উত্ত্যক্তকারী তামিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহসমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাহামুদুর রহমান মাসুদ/আরএআর/জেআইএম
Advertisement