দেশজুড়ে

পরকীয়ার অভিযোগে জরিমানা, লজ্জায় আত্মহত্যা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সালিশে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে জরিমানা করায় লজ্জায় মো. খোকন (২৪) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়া গ্রামের একটি বাগান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিউলি বেগম ও তাহেরী বেগম নামে দুইজনকে থানায় নেয়া হয়েছে।

Advertisement

এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তিনি আত্মহত্যা করেন। নিহত খোকন একই এলাকার কামিলা বাড়ির ফজল হকের ছেলে। তিনি দিনমজুরের কাজ করেন।

স্থানীয়রা জানান, ব্রহ্মপাড়া গ্রামের কামিলা বাড়ির এক গৃহবধূর সঙ্গে খোকনের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। ওই বাড়ির মো. সোহাগ, কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক রবিন হাসান রব, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম ও স্থানীয় রাজু এ অভিযোগ করেন। এ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তারা খোকনকে ওই বাড়িতে ডেকে আনেন। রাতেই সেখানে যুবলীগ নেতা রবিন ও মোর্শেদসহ কয়েকজন ঘটনাটি নিয়ে সালিশের আয়োজন করে। এ সময় খোকনকে অভিযুক্ত করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

শুক্রবার সকাল ১০টার মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করার শর্তে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু পরকীয়ার ঘটনাটি অস্বীকার করে খোকনের কান্নাকাটিতেও তারা সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। তখন সালিশ থেকে খোকনকে নানা ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করা হয়। এ সময় কৌশলে সালিশ থেকে বের হয়ে পাশের একটি পরিত্যক্ত বাগানে গিয়ে খোকন আত্মহত্যা করে।

Advertisement

নিহত খোকনের বাবা ফজল হক জানান, তার ছেলেকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে খোকন জড়িত ছিল না। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সে কান্নাকাটিও করেছে। কিন্ত পরকীয়ার অভিযোগে তার ছেলেকে জরিমানা করা হয়েছে। অপমান সহ্য করতে না পেরে খোকন আত্মহত্যা করেছে। তিনি সালিশকারীদের বিচার দাবি করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক রবিন হাসান রব বলেন, খোকনের আত্মহত্যার বিষয়টি শুনেছি। তবে পরকীয়ার ঘটনায় সালিশের বিষয়টি আমি জানি না। আমার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল অপ-প্রচার চালাচ্ছে। সালিশ শেষে আমি ঘটানাস্থলে গিয়েছিলাম।

এ বিষয়ে রামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিউলি বেগম ও তাহেরী বেগম নামে দুই নারীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এতে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

কাজল কায়েস/আরএআর/পিআর

Advertisement