খেলাধুলা

আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে থাকছে না কোনো নতুন মুখ!

খবর : বাংলাদেশে এসে টেস্ট খেলার আগে একটি দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আফগানরা। আগামী ১ ও ২ সেপ্টেস্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিসিবি একাদশের সাথে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলবে আফগানিস্তান।

Advertisement

পাশাপাশি একটি প্রশ্নও উকি ঝুঁকি দিচ্ছে; আচ্ছা প্রতিপক্ষ আফগানরা যদি বাংলাদেশে খেলতে এসে টেস্টের আগে গা গরম করার পাশাপাশি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে, তাহলে সাকিব, মুশফিকরা কি একদিনের সীমিত ওভারের ফরম্যাট থেকে আবার টেস্টে ফেরার আগে অন্তত একটিও দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে না?

তাদের জন্য ইতিবাচক জবাব, হ্যাঁ খেলবে এবং সেটা প্রায় একই সময়ে মানে ৩০-৩১ আগস্ট শেরে বাংলায় দু’দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় শুরু হবে সেই প্রস্তুতি ম্যাচ।

তবে এটাকে ট্রায়াল ম্যাচ ভাবার কোনই সুযোগ নেই। কারণ এই দু’দিনের ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই হয়ত আফগানিস্তানের সাথে টেস্টের দল ঘোষণাও হয়ে যেতে পারে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল ৩০ আগস্ট শুক্রবারই হয়ত দল চূড়ান্ত হয়ে যাবে। হয় আগামী কাল না হয় পরশু, শনিবারই আফগানিস্তানর সাথে টেস্টের দল ঘোষণা।

Advertisement

কেমন হবে দল? কোন নতুন মুখ থাকবেন কি না? তামিম ইকবালের বদলে কাকে নেয়া হবে? ক’জন ব্যাটসম্যান থাকবেন দলে? পেস বোলার থাকবেন কত জন? ক’জন স্পিনার নেয়া হবে? এসব কৌতুহলি প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।

এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে কথা হলো প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর সঙ্গে। একজন প্রধান নির্বাচক একটা টেস্টে দল ঘোষণার আগের দিন প্রচার মাধ্যমের সাথে আলাপে দল সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে দল নিয়ে পরিষ্কার ধারনা দেবেন না। সেটা তার অবস্থানগত কারনেই দেবেন না। দেয়া যায়ও না। নান্নুও দেননি।

তবে তার সঙ্গে কথা-বার্তায় কিছু আভাস ইঙ্গিত মিলেছে। সে সূত্র ধরেই বলা, আগে মনে হলেও শেষ পর্যন্ত টেস্ট দলে কোন নতুন মুখ থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। শূন্যের কোঠায় বললেও ভুল হবে না।

আসলে নতুন মুখ নেবার জায়গাও কম। কারণ, পুরো দলে শূন্যতা বা খালি জায়গা বলতে ছিলই মোটে একটি। সেটা হলো ওপেনিং ব্যাটসম্যানের কোটায়। নিজ থেকে বিশ্রাম চেয়ে ছুটির আবেদন করে এ টেস্টে এবং জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন জাতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেই তামিম ইকবাল।

Advertisement

টেস্টে তার সাম্প্রতিক পার্টনার সাদমান ইসলামকে নিশ্চিত ধরলে আরও একজন সঙ্গী দরকার। সেই সঙ্গীর সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে তিন জনের মধ্যে ছিলেন এক নতুন মুখ সাইফ হাসান। তার দিকেও চোখ ছিল নির্বাচকদের। তবে শেষ খবর, সাইফকে সম্ভবত বিবেচনায় আনা হচ্ছে না। সাদমানের সাথে পুরনো মুখকেই বেছে নিতে আগ্রহী টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা।

সাইফের সাথে দুই সাবেক টেস্ট ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি, ইমরুল কায়েসও ছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থী। যতদুর জানা গেছে হয় তাদের একজনকে, না হয় এর বাইরে কাউকে সাদমানের সাথে সম্ভাব্য ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে বেছে নেয়ার চিন্তা চলছে।

বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে, হয় ইমরুল-জহুরুল অমির কেউ ১৫ জনের দলে ঢুকবেন। না হয় সৌম্য সরকারকে দিয়ে ওপেন করানো হবে। মানে সৌম্যকেই সম্ভাব্য ওপেনারের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।

এরপর আসছে ব্যাটসম্যান প্রসঙ্গ। বিশ্বকাপে ফর্ম ভাল ছিল না। শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মোটেই ভাল খেলেননি। তারপরও হয়ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ঠিকই দলে থেকে যাবেন। তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় এনে রিয়াদকে দলে রাখার চিন্তা ভাবনা চলছে।

রিয়াদ থাকলে দলের গঠন শৈলি বা টিম কম্বিনেশন হতে পারে এ রকম- তিন পেসার (মোস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদ, শফিউল ইসলাম কিংবা আবু জায়েদ রাহী), চার স্পিনার (সাকিব, তাইজুল, মিরাজ ও নাঈম হাসান), আর আটজন ব্যাটসম্যান।

এখন একটি কথা আছে। আঙ্গুলের ইনজুরি শতভাগ ঠিক না হলে হয়ত মিরাজকে নাও বিবেচনায় আনা হতে পারে। মিরাজ যদি ইনজুরিমুক্ত হয়ে দলে থাকতে না পারেন, তাহলে ব্যাকআপ অফস্পিনার হিসেবে অবধারিত হবে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের স্কোয়াডে থাকার সম্ভাবনা।

কারণ, মিরাজ না থাকলে দুই বাঁ-হাতি সাকিব-তাইজুলের সাথে অফ স্পিনার নাঈম স্পিন আক্রমণ সামলাবেন। সাথে সহায়ক শক্তি হিসেবে মোসাদ্দেককেও রাখা হতে পারে। কারণ তিনি অফ স্পিনটা ভালই পারেন। ঠেকা কাজ চালানো যাকে বলে।

যতদুর জানা গেছে, পেস ডিপার্টমেন্টে সাকুল্যে তিনজনকে রাখা হবে। সেখানে বাঁ-হাতি মোস্তাফিজুর রহমানের থাকা শতভাগ নিশ্চিত। পাশাপাশি উঠে আসছে আরও কটি নাম; খালেদ, তাসকিন, শফিউল আর আবু জায়েদ রাহী।

এদের যে কোনো দু’জনকে হয়ত বেছে নেয়া হবে। তবে যেহেতু খালেদ দেশের মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন, তাই তার দলে থাকার সম্ভাবনা বেশি। বাকি একজন কে হবেন, শফিউল, তাসকিন নাকি রাহী? সেটাই দেখার বিষয়।

টাইগারদের সম্ভাব্য স্কোয়াড

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, জহুরুল ইসলাম অমি, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদ, শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ/আবু জায়েদ রাহী।

এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম