রান্নায় স্বাদ, সুগন্ধ বাড়াতে কালোজিরার ব্যবহার করা হয়। আচার তৈরি কিংবা ফোড়ন দেয়া কালোজিরা ছাড়া প্রায় অসম্ভব। এর ভর্তাও বেশ সুস্বাদু। কিন্তু এর দৌড় কি এপর্যন্তই? একদমই না। বরং এসব সাধারণ ব্যবহারের আড়ালে লুকিয়ে আছে কালোজিরার অসাধারণ সব উপকারিতা।
Advertisement
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কালোজিরা রাখা মানে শরীরকে সুস্থতার দিকে অনেকটাই এগিয়ে রাখা। এটি আমাদের শরীরকে নানা অসুখের সঙ্গে লড়তেও সাহায্য করে। কালোজিরার রয়েছে অনেক ওষধি গুণ। চলুন জেনে নেয়া যাক-
সর্দি-কাশি নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে? তাহলে দ্বারস্থ হোন কালোজিরার। একটি পরিষ্কার কাপড়ে কালোজিরা জড়িয়ে তা নাকের কাছে নিয়ে গিয়ে বড় করে শ্বাস টানুন কিছুক্ষণ ধরে। এর ঝাঁজ বুকে জমে থাকা শ্লেষ্মাকে টেনে বার করতে সাহায্য করে। নাক বন্ধের সমস্যাতেও ঘরোয়া এই উপায়ের জুড়ি মেলা ভার।
কালোজিরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফসফরাস। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করে ফসফরাস। তাই জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকাতে কাল জিরাকে অবহেলা করলে চলবে না।
Advertisement
হজম কিংবা পেটের অন্যান্য সমস্যায়ও আস্থা রাখতে পারেন কালোজিরায়। কালোজিরা শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়া করে নিন। এবার আধ কাপ ঠান্ডা করা দুধে এই কালোজিরা এক চিমটি মিশিয়ে খালিপেটে খান প্রতিদিন। দুধ ঠান্ডা হওয়ায় বদহজমও হবে না, বরং পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে কালোজিরার বদৌলতে।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা হঠাৎ দেখা দিলে সবসময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে না। অনেক সময় হাতের কাছে মজুদ থাকে না প্রয়োজনীয় ওষুধও। কালোজিরা রাখুন কাপড়ে জড়িয়ে। এবার নাকের কাছে নিয়ে এর গন্ধ নিন। শ্বাসকষ্টের কষ্ট থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে এই ঘরোয়া উপায়।
শুধু যে কালোজিরার ব্যবহারেই উপকার মেলে এমন নয়, এর তেলও আমাদের শারীরিক নানা সমস্যা সমাধানে কাজে আসে। ক্রনিক মাথা যন্ত্রণা মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে কালোজিরার তেল কপালে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়।
চুল পড়া বন্ধ করতেও কালোজিরার তেল উপকারী। এক চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে সম পরিমাণ কালোজিরার তেল মিশিয়ে গরম করে নিন। মাথায় ত্বকে এই তেল হালকা অবস্থায় মালিশ করুন। এক সপ্তাহ টানা এমন করলে চুল পড়ার সমস্যা মিটবে অনেকটাই।
Advertisement
মেদ ঝরাতে গ্রিন টি-র সঙ্গে মিশিয়ে নিন কালোজিরার গুঁড়া। হজমশক্তি বাড়িয়ে শরীরের মেদ ঝরাতে বিশেষ কাজে আসে এই ঘরোয়া কৌশল।
সর্দি-কাশি থেকে বুকে চাপ লাগলে কলোজিরার তেল গরম করে বুকে ও পিঠে মালিশ করে চাদর গায়ে থাকুন কিছুক্ষণ। বারকয়েক করলেই কষ্ট কমবে। কাশির প্রকোপ থেকেও রক্ষা পাবেন অনেকটাই।
কালোজিরার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তচাপের ওষুধের সঙ্গে এই পথ্য বিশেষ কার্যকরী। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগলে সপ্তাহে এক দিন কালোজিরার ভর্তা রাখুন ডায়েটে।
কালোজিরা ব্যথা সারানোর অন্যতম দাওয়াই। দীর্ঘদিনের পুরনো ব্যথা বা বাতের ব্যথায় কালোজিরার তেল মালিশ করলে অনেকটা স্বস্তি মেলে। তাই ব্যথা দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন কালোজিরার তেল।
কালোজিরায় ফসফেট, ফসফরাস ও লৌহের উপস্থিতি অধিক থাকায় রক্তস্বল্পতার রোগীরা এ থেকে উপকার পেয়ে থাকেন। অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ও ক্যারোটিন থাকায় তা অ্যান্টি ক্যান্সার হিসেবেও খাদ্যমহলে জনপ্রিয়।
এইচএন/জেআইএম