ঘুম আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। আল্লাহ তাআলা রাতকে ঘুমের জন্য সৃষ্টি করেছন। আবার রাতের কিছু সময় আল্লাহর জিকির বা ইবাদতে রয়েছে অনেক বড় নেয়ামত। তবে যদি কোনো ব্যক্তি ঘুমের আগে ছোট্ট একটি আমল করে তবে সে দু’টি বড় নেয়ামত লাভ করবে।
Advertisement
ঘুমের আগের এ ছোট্ট আমলটি হলো ওজু করে ঘুমানো। যদি কেউ বিছানায় যাওয়ার আগে ওজু করে নেয় এবং ঘুমাতে যায়, আল্লাহ তাআলা তাকে দুইটি নেয়ামত দান করেন। হাদিসে এসেছে-
>> ক্ষমা প্রার্থনায় ফেরেশতা নিযুক্তহজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু বর্ননা করেন, নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘তোমরা তোমাদের শরীরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কর, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তোমাদেরকে পরিচ্ছন্ন করে দেবেন। আর যখন আল্লাহর কোনো বান্দা ওজু করে বিছানায় ঘুমাতে যায়, আল্লাহ ওই ব্যক্তির সঙ্গে (তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনায়) একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে দেন। ঘুমের মধ্যে ওই বান্দা যখনই নড়াচড়া করে কিংবা এপাশ-ওপাশ করে তখনই ওই ফেরেশতা তার জন্য এ বলে দোয়া করে- ‘আল্লাহুম্মাগফির লি-আবদিকা’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনার এ বান্দাকে ক্ষমা করে দিন। কেননা সে পবিত্রতা অর্জন করে ঘুমিয়েছে।’ (তাবারানি)
ওজু করে বিছানায় শোয়া ব্যক্তি যখন ঘুমিয়ে পড়ে, ফেরেশতা তখন ঘুমায় না। যখনই পবিত্রতা অর্জনকারী ঘুমে নড়া-চড়া করে কিংবা এপাশ-ওপাশ করে তখনই ফেরেশতা তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
Advertisement
আল্লাহই পবিত্রতা অর্জনকারী ব্যক্তির জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করেন। আর সে ফেরেশতা যদি ওই ঘুমন্ত ব্যক্তির জন্য দোয়া করে, তবে অবশ্যই আল্লাহ সে দোয়া কবুল করেন। ওই ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।
>> হতাশা-অশান্তি দূর হয়ে দোয়া কবুল হয়মানুষ অনেক হতাশা, দুশ্চিন্তা কিংবা অশান্তিতে ভোগে। একটি সময় এসব দুশ্চিন্তা ও অশান্তি নিয়ে মানুষ ঘুমাতে যায়। যদি কোনো ব্যক্তি হতাশা-দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চায়, আল্লাহর কাছ থেকে কোনো চাহিদা পূরণ করে নিতে চায়, তবে তার জন্য একটি আমলই যথেষ্ট। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো বান্দা যখন ওজু করে পবিত্র হয়ে ঘুমায় আর ঘুমানোর পর যদি কোনো কারণে রাতে তার ঘুম ভেঙে যায় তবে সে যেন (একটু হলেও) আল্লাহর জিকির করে। যদি কেউ আল্লাহ জিকির করার পর তার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে তবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা-ই দিয়ে দেন।’ (মুসনাদে আহমদ)
ঘুমের আগে ওজু করে ঘুমানো একেবারেই সহজ কাজ। এ কাজে না আছে কোনো ক্ষতি আর না আছে কষ্ট। সময়ও বেশি প্রয়োজন হয় না। তাই ঘুমের আগে ওজু করার মাধ্যমে আমরা পেতে পারি আল্লাহর ক্ষমা।
Advertisement
হতাশা-অশান্তি ও দুশ্চিন্তা থেকেও মুক্তি লাভ সহজ হয়ে যায়। আবার বান্দার চাহিদাও পূরণ হওয়ার উত্তম সুযোগ ও ওজু করে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে জেগে ওঠে ছোট্ট জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ কামনা করা।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিস রাতে সাহায্য প্রার্থনার জন্য কুরআনের সেই শ্রেষ্ঠ দোয়ার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়-رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِউচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল-আখিরাতি হাসানাতও ওয়া ক্বিনা আঝাবান নার।’অর্থ : হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ এবং পরকালের কল্যাণ দান করুন। আর জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাদ দান করুন।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে ওজু করে ঘুমানোর তাওফিক দান করুন। ওজু করে ঘুমানোর মাধ্যমে উল্লেখিত নেয়ামতগুলো লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম