ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমানে চাঞ্চল্যকর খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় আগামীকাল (৩০ অগস্ট) রায় দেবেন দেশটির বিশেষ এনআইএ আদালতের বিচারক।
Advertisement
অভিযুক্ত ১৯ জন বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন নিজেদের দোষ স্বীকার করেছিলেন। বুধবার তাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন বিচারক। তার পরেই তিনি জানান, ওই ১৯ জনের সাজা আগামী পরশু শুক্রবার ঘোষণা করবেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দুই সদস্য বিস্ফোরণে নিহত হন। এ ঘটনার তদন্তভার নেয় ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএ)।
এ ঘটনায় করা মামলায় এখনও পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে এনআইএ। এর মধ্যে ১৯ জন দোষ স্বীকার করেছেন। তবে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পেছনে থাকা নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ’র (জেএমবি) শীর্ষ নেতাদের মধ্যে যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কদর গাজি, কওসর ওরফে বোমা মিজান, ডালিম শেখ, ইউসুফ শেখসহ ১২ জন দোষ স্বীকার করেনি। এই ১২ জনের বিচার চলবে বলে জানিয়েছেন বিচারক।
Advertisement
মিজান ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করে দুই সঙ্গীসহ পলাতক হন। মিজান এরপর চোরাইপথে ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করেন। খাগড়াগড়ের যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, সেটার মালিক ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা। ওই বাড়ি ছিল জেএমবির ঘাঁটি। ওই বাড়িতে গ্রেনেড, বোমা তৈরি করা হতো।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর দুপুরে দোতলা বাড়িটিতে বোমা তৈরির সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটলে দুজনের মৃত্যু হয়। আহত হন তিনজন। সেদিন প্রাথমিক তদন্ত শেষে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি দাবি করে, নিহত দুজন জেএমবির সদস্য। তারা হলেন শাকিল আহমেদ ও সুবহান মণ্ডল।
বিচার চলাকালীনই গ্রেফতারদের মধ্যে গুলশনারা বিবি, আলিমা বিবিসহ ১৯ জন অভিযুক্ত তাদের আইনজীবী ফজলে আহমেদ এবং মহম্মদ আবু সেলিমের মাধ্যমে আদালতকে জানান যে, তারা তাদের দোষ স্বীকার করতে চান। আদালতকে জানিয়ে সেই চিঠি পাঠানো হয় এনআইএ-কেও।
দোষ স্বীকার করা অভিযুক্তদের আইনজীবী ফজলে আহমেদ এ দিন বলেন, ‘আমার মক্কেলদের আবেদন বিচারক মঞ্জুর করেছেন। তিনি শুক্রবার রায় দেবেন। আমরা আদালতকে শাস্তি কমানোর আবেদন জানাব। কারণ, আমার মক্কেলরা নিজেরাই তাদের দোষ স্বীকার করেছেন।’
Advertisement
যদিও এআইএয়ের আইনজীবী ওই ১৯ জনের সর্বোচ্চ শাস্তিরই আবেদন করেছেন বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলালের কাছে।
এনআইএ সূত্রের খবর, বিচারক ওই ১৯ জনের সঙ্গে একান্তে কথা বলে জানতে চান যে, তাদের দোষ স্বীকার করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে কারও প্রভাব বা প্ররোচনা আছে কি না? সর্বোচ্চ শাস্তি সম্পর্কেও দোষীরা ওয়াকিবহাল কি না, তা-ও জানতে চান বিচারক। দোষীরা জানান, তারা স্বেচ্ছায় ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরেই সাজা ঘোষণার কথা বলেন বিচারক।
সূত্র : আনন্দবাজার
জেডএ/জেআইএম