শেরপুরে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক মো. মহসীন আলী মাস্টার (৮২) আর নেই। শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের রাজাবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্নানিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন) । প্রায় একমাস যাবৎ ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার রাতেই তিনি বাড়ি ফেরার তিন ঘণ্টার মধ্যে মারা যান। তিনি স্ত্রী, চার ছেলে, দুই মেয়ে রেখে গেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে মহসীন আলী মাস্টার একজন সংগঠক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে শেরপুরে সাত সদস্যের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের তিনি ছিলেন অন্যতম সদস্য। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে তিনি ভারতের ঢালু ইয়ুথ ক্যাম্পের ইনচার্জ ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি শেরপুর থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত শেরপুরকে ৬১তম জেলা হিসেবে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগেরও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতির পাশপাশি তিনি শেরপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়া শতবর্ষের ঐতিহবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনও করেন। শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মহসীন আলী মাস্টার। নানা সমাজসেবামূলক কাজে অংশ নিয়েছেন। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি শেরপুরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিএসের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সৎ, সজ্জন, গুণী এই সংগঠক, শিক্ষাবিদ ও রাজীনতিকের মৃত্যুতে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক চাঁন, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও পৌর মেয়র হুমায়ুন কবীর রুমান, এফবিসিআই পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা মো. মাসুদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরু, সাংবাদিক বিপ্লবী রবি নিয়োগী সভাকক্ষ পরিচালনা পর্ষদ এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতে শহরের মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে দোয়া করে ছুটি ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শহরের চকবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে তার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। বাদ জোহর দুপুর ২টায় শহরের তিনআনি বাজার মাইসাহেবা মসজিদ চত্বরে প্রথম নামাজে জানাযা ও বিকাল ৩টায় সদর উপজেলার মির্জাপুর ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে। হাকিম বাবুল/এমজেড/এমএস
Advertisement