রাজনীতি

রাজনীতির ছদ্মবেশে উগ্রপন্থার চর্চা করছে জামায়াত : জয়

বৈধ রাজনীতির ছদ্মবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহিংস উগ্রপন্থার চর্চা করছে উল্লেখ করে দলটিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। মঙ্গলবার ওয়াশিংটন টাইমসের মতামত বিভাগে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে তিনি এ কথা বলেন।নিবন্ধে জয় বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য পশ্চিমা জাতির প্রয়োজন একটি স্থিতিশীল, সন্ত্রাসমুক্ত দক্ষিণ এশিয়া। শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ আইন দ্বারা শাসিত বাংলাদেশ এক্ষেত্রে এই অঞ্চলের পথনির্দেশক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ বৃদ্ধির স্বার্থে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির কেন্দ্রে থাকা উচিত শক্তিশালী ও উন্নয়নশীল বাংলাদেশ। তাই জামায়াতে ইসলামী প্রকৃত অর্থে যা, সেই নামে তাকে অভিহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতস্তত করা উচিত নয়, আর সেই প্রকৃত নাম : আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন।সজিব ওয়াজেদ জয় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, হিন্দু সম্প্রদায় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর দলটির হামলার কথা তুলে ধরেন বলেন, ভয়ংকর ইসলামিক স্টেট ও অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলো মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য বড় ধরনের হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আইনপ্রণেতা এবং নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নতুন জোট গঠনের কৌশল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। একটি মুসলিম জাতি হিসেবে বাংলাদেশ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের গর্বিত মিত্র বাংলাদেশকে একটি ধর্ম নিরেপেক্ষ, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গণতান্ত্রিক মডেল এবং সন্ত্রাস দমনের যুদ্ধে নেতৃস্থানীয় বলে দেখা হয়। বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের প্রাথমিক পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে চরমপন্থী ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামী।জয় আরো বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় দুই তলাবিশিষ্ট একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ২০টি বোমা, ২৫টি বাঁশের লাঠি এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উগ্রপন্থী বই জব্দ করেছে।পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, বোমাগুলো খুবই শক্তিশালী এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ধরনের দেশীয় বোমা জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসী হামলায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত এক প্রতীকে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের মতে, এসব ডিভাইস বিশেষভাবে তৈরি করা হয় নিরপরাধ মানুষদের ভয়ানক ক্ষতিসাধনের জন্য, যারা তৈরি পোশাক শিল্পে স্বল্প মজুরিতে কাজ করেন।তিনি লেখেন, চার ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারের হত্যার বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছে। বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষকরাও এ বিষয়টি জেনে বিস্মিত হননি যে, নিহত ব্লগারদের বেশির ভাগই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) দ্বারা যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে লেখালেখি করে আসছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইসিটির রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামী দেশজুড়ে শত শত বোমা স্থাপনের মাধ্যমে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে তৎপরতা বাড়িয়েছে। যার ফলে প্রাণ হারিয়েছে বৃদ্ধসহ শিশুরাও।সজীব ওয়াজেদ উল্লেখ করেন, ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়দার বিস্তৃতির সঙ্গে বাংলাদেশে চরমপন্থী সহিংসতার এই উর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরো সমস্যামুখর হয়ে ওঠেছে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ইন্টারনেটে প্রচারিত একটি ৫৫ মিনিটের ভিডিও বার্তায় আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি বাংলাদেশিদের প্রতি দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে জিহাদের পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানান। তবে এ ব্যাপারটি যাতে সত্য না হয় তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।জয় বলেন, সংগঠন হিসেবে জামায়াতের লক্ষ্য গোপন রাখার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি জামায়াতের নেতারা। এই দল এবং এর সহযোগীরা তরুণ ছাত্রদের প্রলুব্ধ করে নিজেদের দল ভারি করছে এবং বাংলাদেশে একটি ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আল কায়দার মতো সংগঠনকে সহযোগিতা করা শুরু করে জামায়াত এটা প্রমাণ করেছে যে, তারা লক্ষ্য বাস্তবায়নে সম্ভব সবকিছুই করবে।উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি এই পত্রিকাটিতে খালেদা জিয়ার নামে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়, যাতে জিএসপি সুবিধা বাতিলের জন্য সরাসরি আহ্বান জানানো হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ওই নিবন্ধ প্রকাশের পর ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সমালোচনায় ফেটে পড়েন। জাতীয় সংসদেও এ নিয়ে আলোচনা হয়।এদিকে যুক্তরাজ্যে ও বাংলাদেশের মধ্যে জঙ্গিবাদ ও উগ্রপন্থা দমনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে আরো সতর্ক হতে বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বুধবার জনপ্রিয় ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানানো হয়েছে।# উগ্রপন্থা দমনে ডেভিড ক্যামেরনকে সতর্ক হতে বললেন শেখ হাসিনাআরএস/এমএস

Advertisement