গোপন কক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতির কক্ষে গোপন ‘খাস কামরার’ সন্ধান পাওয়া গেছে।
Advertisement
সভাপতির কক্ষে ‘খাস কামরা’ থাকায় বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নারী শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনে এ বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘খাস কামরার’ খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দেয়। কক্ষটিকে ‘যৌন হয়রানির কক্ষ’ হিসেবে অভিহিত করেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতির অফিস কক্ষসংলগ্ন একটি গোপন ‘খাস কামরা’ রয়েছে। সেখানে খাট ও অন্যান্য আসবাবপত্র দিয়ে বেডরুম সাজানো হয়েছে। মূলত এ ‘খাস কামরা’ ছাত্রীদের ‘যৌন হয়রানির কক্ষ’। বিভিন্ন সময় নারী শিক্ষার্থীদের ‘খাস কামরায়’ যৌন নির্যাতন চালানো হয়। বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’ হলেও সম্মান ও শিক্ষাজীবনের কথা ভেবে লিখিত অভিযোগ দেয়ার সাহস পাননি শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে ‘খাস কামরা’ সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ‘খাস কামরার’ খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ চৌধুরী আসিফ বলেন, অফিস কক্ষে এ ধরনের খাস কামরা রাখা কী প্রয়োজন তা আমার বোধগম্য নয়। খাস কামরায় নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করা হয়েছে কিনা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা দরকার।
Advertisement
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, নৈশ ও নিয়মিত ক্লাসের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়ার জন্য ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের দীর্ঘসময় অবস্থান করতে হয়। মূলত এ কারণে বিভাগের সাবেক সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ‘বিশ্রাম কক্ষ’ তৈরি করেছেন, যা শুধু শিক্ষকের বিশ্রামের জন্যই ব্যবহার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সাবেক সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বলেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন কাজের জন্য কক্ষটি তৈরি করা হয়েছিল। অন্য কোনো কারণে নয়। একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে নোংরামির চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, দুপুরে ভিসি স্যারের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয়ে সভা করার সময় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ওই বিভাগে যাই। ওই বিভাগের চেয়ারম্যান এবং শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শুধু বিশ্রামের জন্যই ওই কক্ষটি করা হয়েছে। পরে ওই কক্ষ থেকে আমরা খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দিয়েছি। অন্য কিছু আছে কিনা- সে ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জামালপুরের ডিসির একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। এ ঘটনায় ডিসি আহমেদ কবীরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
Advertisement
একে জামান/এএম/জেআইএম