জিটুজি পদ্ধতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খোলাবাজার (স্পট মার্কেট) থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে এলএনজি (তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করতে চায় সরকার। এ জন্য বিভিন্ন দেশের ৩০টি কোম্পানি-কনসোর্টিয়ামকে নির্বাচিত করা হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এসব কোম্পানি থেকে এলএনজি আমদানির অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব উঠছে।
Advertisement
বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেস এগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ঘনফুট গ্যাসের তাপমান ১ হাজার ২৫ থেকে ১১শ’ বিটিইউ থাকার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া এলএনজি বহনকারী জাহাজের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ২৫ হাজার ঘনমিটার থেকে ২ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার পর্যন্ত থাকতে হবে। কেনার সময়ের চলমান বাজারদর, টার্মিনালের প্রাপ্যতা, পুনঃগ্যাসীকরণ ক্ষমতা এবং চাহিদার ওপর নির্ভর করে এলএনজি আমদানির দরপত্র আহ্বান করা হবে। পেট্রোবাংলা শিগগিরই কোম্পানিগুলোর কাছে ক্রয় প্রস্তাব দেবে এবং এ সংক্রান্ত চুক্তি করবে।
জানা যায়, দেশে এলএনজি আমদানির পর তা প্রাকৃতিক গ্যাসের সাথে মিশিয়ে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে। দেশীয় গ্যাস সালফারমুক্ত হলেও এলএনজিতে কিছু মাত্রায় সালফার থাকবে।
Advertisement
নির্বাচিত ৩০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি কোম্পানি সিঙ্গাপুরভিত্তিক এবং পাঁচটি জাপানভিত্তিক। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, কাতার, আরব আমিরাত, চীন, হংকং, বারমুডা, মালয়েশিয়ার কোম্পানি রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিল্প গ্রুপ সামিটের সামিট কর্পোরেশন এবং সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানিও পেট্রোবাংলার কাছে এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির জন্য বিভিন্ন দেশের ৩০টি কোম্পানি-কনসোর্টিয়ামকে নির্বাচিত করেছে সরকার। সহজেই এ ব্যয়বহুল জ্বালানি কেনার জন্য জিটুজি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) পদ্ধতির পাশাপাশি খোলাবাজার থেকেও তাৎক্ষণিক কিংবা যত দ্রুত সম্ভব এলএনজি কেনার লক্ষ্যে এ কোম্পানিগুলোকে নির্বাচন করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলার আওতাধীন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির (আরপিজিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে পেট্রোবাংলা এলএনজি আমদানি শুরু করবে। ইতোমধ্যে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণও সম্পন্ন হবে। কাতার থেকে এলএনজি আমদানির জন্য সরকারি পর্যায়ে চুক্তিও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে আগামীতে বিপুল পরিমাণ এলএনজি আমদানি করতে হবে। সম্ভাব্য বাজারগুলো থেকে এ জ্বালানি কেনার ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে ৩০টি কোম্পানিকে এ জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। কার্যাদেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব কিংবা তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে এ প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানি সরবরাহ করবে।
Advertisement
জিটুজি পদ্ধতিতে এলএনজি আমদানি না করে খোলাবাজার থেকে আমদানি করা হলে কিছুটা কম মূল্যে পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে।
এমইউএইচ/আরএস/এমকেএইচ