রাজনীতি

মোশতাক মীর জাফর হলে জিয়াউর রহমান রায় দুর্লভ : ওবায়দুল কাদের

খন্দকার মোশতাক মীর জাফর হলে জিয়াউর রহমান রায় দুর্লভ বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

Advertisement

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধের সময় নবাব সিরাজউদ্দৌলার কর্মকর্তা মীর জাফর ও রায় দুর্লভ নবাবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইংরেজদের সহযোগিতা করেন এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। বাংলার ইতিহাসে তারা দু’জন বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত। অন্যদিকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় সরকারে মন্ত্রী ছিলেন খন্দকার মোশতাক এবং জিয়াউর রহমান ছিলেন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একুশে আগস্টের মাস্টারমাইন্ড আর ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড একই পরিবারের। পিতা এবং পুত্র আর দুই হত্যাকাণ্ডের প্রাইম টার্গেট হলেন পিতা এবং কন্যা। ইতিহাসের কো-ইন্সিডেন্স লক্ষ্য করুন।’

তিনি বলেন, ‘পলাশীতে রায় দুর্লভের যে ভূমিকা ছিল, ১৫ আগস্ট সেনাপতি জিয়াউর রহমানেরও খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে একই ভূমিকা ছিল। মোশতাক যদি হয় মীর জাফর, রায় দুর্লভ হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। ইতিহাসের এ অবাঞ্ছিত সত্যের পুনরাবৃত্তি বার বার ঘটেছে।’

Advertisement

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জবানবন্দিতে মুফতি হান্নান বলেছে, হাওয়া ভবন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই গ্রেনেড হামলা (১৫ আগস্ট) শুরু হয়। খুন খুনকে ডেকে আনে, হত্যা হত্যাকে ডেকে আনে। যে বুলেট শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাকে এতিম করেছে, সেই বুলেট বেগম জিয়াকে বিধবা করেছে। এই অমোঘ সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্য চোখের জল ফেলে লাভ নেই। ৪৪ বছর পর আর শোক করে লাভ নেই। বঙ্গবন্ধু যে শিক্ষা আমাদের দিয়ে গেছেন, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, সেই বাংলাদেশটা যদি আমরা নির্মাণ করতে পারি....। বঙ্গবন্ধুই বলেছেন, গ্রেট জব যদি তুমি করতে চাও, গ্রেট স্যাকরিফাইস তোমাকে করতে হবে। প্রত্যেকেরই প্রফেশনাল, চাকরি, রাজনৈতিক জীবনে আমরা যদি গ্রেট জব করতে গিয়ে গ্রেট স্যাকরিফাইস করতে পারি, সেই মানসিকতা অর্জন করতে পারি, তাহলেই কেবল সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে তার প্রতি (বঙ্গবন্ধু) শ্রদ্ধা নিবেদনে এর চেয়ে বড় কিছু আর নেই।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সচিবালয়ে আমরা যারা আছি। আমরা যারা সরকারের প্রশাসনে আছি, কাজ করি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে -এই শপথটা আসুন আমরা মনে মনে নেই। আগস্ট মাস হলেই বঙ্গবন্ধুর বড় বড় ছবি। কখনও কখনও বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রদর্শন করতে গিয়ে নিজের ছবিটাকে আরও বড় করে অনেকে প্রদর্শন করে। ছবি প্রদর্শন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করলে, তার নৈতিকতা থেকে শিক্ষা নিলে, সেটাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সর্বোৎকৃষ্ট উপায়।’

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ মঈনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, ভূমি সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর মোশাররফ হোসেন।

Advertisement

আরএমএম/আরএস/জেআইএম