ভারতের আসামের নাগরিকপঞ্জির খসড়া তালিকা থেকে একের পর এক বাঙালি হিন্দুর নাম বাদ পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এমন অনেক বাঙালি হিন্দুর নামই নাগরিক তালিকায় নেই।
Advertisement
গুয়াহাটির বাসিন্দা ৫২ বছরের উমাকান্ত ভৌমিক একজন বাঙালি হিন্দু। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমল থেকেই বিজেপির সমর্থক তিনি। গত বছর প্রকাশিত আসামের নাগরিক তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছিল তাদের মধ্যে তিনি এবং তার পরিবারও আছেন।
এনআরসি তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া উমাকান্ত ভৌমিক আক্ষেপের সুরে বলেন, একবার নয়, সাতবার আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এনআরসি শুনানিতে গিয়েছি। আমাদের খুব বেশি আশা নেই। আমি একেবারে শুরু থেকেই বিজেপির সমর্থক। আমরা বাঙালি হিন্দুরাই আসামে বিজেপির প্রথম সমর্থক ছিলাম।
এনডিটিভিকে তিনি বলেন, আমরাই আসামে বিজেপির ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছি অথচ এখন যখন আমাদের এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে তখন সরকার আমাদের সহায়তা করছে না।
Advertisement
১৯৫১ সালে আসামে প্রথম প্রকাশিত নাগরিক তালিকা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে পরিবর্তিত হচ্ছে। সেখানে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে যারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে এই রাজ্যে প্রবেশ করেছে তাদের তালিকা থেকে পৃথক করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে এনআরসি আপডেট করা হচ্ছে।
আসামের অনেকেই বলছেন যে, তারা এখন এনআরসির খসড়া তালিকা নিয়ে সংশয়ে আছেন। ইতোমধ্যেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার অন্যান্য রাজ্যগুলোতেও এনআরসি তালিকা প্রস্তুতের পরিকল্পনা করছে। অথচ আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপিও খসড়া তালিকায় ভুল অন্তর্ভুক্তি এবং নাম বাদ যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এদিকে এই বিপুল সংখ্যক হিন্দুদের নাম এনআরসির খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। কেননা এটা সহজেই অনুমান করা যায় যে, আসামের ১৮ শতাংশ বাঙালি হিন্দু ভোটারের বেশিরভাগই বিজেপিকে সমর্থন করে।
গত লোকসভা নির্বাচনে আসামের ১৪টির মধ্যে ৯টি আসন জিতেছে বিজেপি। আদিবাসী, অসমিয়া হিন্দু এবং বাঙালি হিন্দুদের ভোট একত্রিত হয়েই বিজেপি এই দুর্দান্ত ফল পেয়েছে বলে মনে করা হয়।
Advertisement
আসামের বাঙালি ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা খসড়ায় যা লক্ষ্য করেছি তা হচ্ছে বাঙালি হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তার সংস্থা আসামে বাঙালি হিন্দুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
টিটিএন/এমকেএইচ