ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং ও স্পট ফিক্সিংয়ের মতো অপরাধের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। কারও বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে, তাকে এমনিই ছেড়ে দেয়া হয় না।
Advertisement
আর সেটি যদি হয় বিশ্বকাপের মতো আসরে, তাহলে তো বাঁচার কোনো পথই নেই। এমনই এক কাণ্ড ঘটিয়ে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন হংকং ক্রিকেট দলের দুই ভাই ইরফান আহমেদ এবং নাদিম আহমেদ। এছাড়া পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের সতীর্থ হাসিব আমজাদকে।
গত ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময়ে ইরফান ও নাদিম অন্তত ১২ বার ভঙ্গ করেছেন আইসিসির ম্যাচ ফিক্সিং বিষয়ক নীতিমালা। এর মধ্যে ছিলো ২০১৪ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির বাছাইপর্ব এবং ২০১৬ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির মূল পর্বের ম্যাচও।
অভিযোগ ওঠার পর দুই বছর আগেই আইসিসির পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল তিন ক্রিকেটারকে। পরে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর প্রাথমিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় তিনজনকেই। তবে এবার আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে দুই ভাই ইরফান ও নাদিমের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।
Advertisement
অন্যদিকে পাঁচ বছরের শাস্তি পাওয়া আমজাদ ফিরতে পারবেন ২০২৩ সালে। তবে সে সম্ভাবনাও শূন্যের কোটায়। কেননা এরই মধ্যে জীবনের ৩১টি বসন্ত কাটিয়ে ফেলেছেন আমজাদ। ডানহাতি এ পেসারের মাঠে ফিরতে ফিরতে বয়স হয়ে যাবে ৩৫। তখন তাকে আদৌ বিবেচনা করা হবে কি-না সেটিই এখন বড় প্রশ্নের।
লাগাতার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অপরাধ করেও হয়তো খুব বেশি শাস্তি পেতে হতো না আমজাদ ও আহমেদ ভাইদের। কিন্তু তারা প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞ এবং এরই মধ্যে আইসিসির এন্টি করাপশন সেমিনারে অংশ নিয়েছেন বেশ কয়েকবার। এতকিছুর পরেও ফিক্সিংয়ের মতো গর্হিত কাজে অংশ নেয়ায় তাদের প্রতি কোনো মায়া দেখায়নি আইসিসি।
আইসিসির মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্স মার্শাল বলেন, ‘এ তিন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে এ তদন্ত চলছিল। নীতিগত কারণেই এ বিষয়টি সবার সামনে না এনে, ভেতরে ভেতরে সব কাজ করা হয়েছে। আহমেদ ভাইদের কাজগুলো সন্দেহজনক ছিলো। এছাড়া তাদের আচরণ ও কথাবার্তায় অন্য ক্রিকেটাররাও উৎসাহিত হচ্ছে, হতে পারে।’
শাস্তি পাওয়া ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ হলো ২০১৪ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির বাছাইয়ের খেলায়। যেখানে স্কটল্যান্ড এবং কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ দুইটিতে নির্দিষ্ট কিছু ওভারে ফিক্সিং করেছিলেন তারা। তবে দুইটি ম্যাচই হংকং জেতায় এ ফিক্সিংয়ে টুর্নামেন্টের চালচিত্রে পরিবর্তন আসেনি। তবে স্পট ফিক্সিংয়ের মতো গর্হিত অপরাধ করায় ঠিকই বড় শাস্তি পেতে হলো ইরফান, আমজাদ, নাদিমদের।
Advertisement
২৯ বছর বয়সী ওপেনার ইরফানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সবচেয়ে বেশি। ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে আলোচনা, ফিক্সিং করা, লবিং করাসহ মোট ৯টি অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির ম্যাচসহ নাদিম ও আমজাদের বিপক্ষে অভিযোগ ৩টি করে।
এসএএস/পিআর