প্রথমে শোনা যাচ্ছিল ৩০ আগস্টের মধ্যেই অর্থাৎ ২৭-২৮ তারিখের দিকে হবে আসন্ন টেস্ট ও ত্রিদেশীয় সিরিজের দল ঘোষণা। পরে শোনা গেল ৩০ তারিখ। আর গতকাল (সোমবার) মিডিয়ার সঙ্গে আলাপে নির্বাচক হাবিবুল বাশার জানালেন, আমরা ৩০ না হয় ৩১ আগস্ট দল চূড়ান্ত করে ফেলব।
Advertisement
তিনি তখন স্বীকার করেছেন, তামিম ইকবাল ছুটিতে থাকায় উদ্বোধনী জুটি সাজাতেই খানিক দেরি হচ্ছে। টিম ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচকরা এখনো ঠিক স্থির করে উঠতে পারেননি কোন দুজনকে দিয়ে সাজানো হবে উদ্বোধনী জুটি।
আগেই জানা, বিশ্রাম চেয়ে ছুটির আবেদন করেছেন এক নম্বর ওপেনার তামিম ইকবাল। ছুটি মঞ্জুর হওয়ায় আফগানিস্তানের সঙ্গে একমাত্র টেস্ট ও পরে জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশকে নিয়ে তিন জাতি-টি টোয়েন্টি আসরে দেখা যাবে না এ বাঁহাতি ওপেনারকে।
এবছর মার্চে নিউজিল্যান্ডেও তামিমের পার্টনার ছিলেন তরুণ সাদমান ইসলাম। অবশ্য গত বছর শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তামিমের অনুপস্থিতিতে ইমরুল আর সৌম্যকে দিয়েও ওপেন করানো হয়েছিল। কিন্তু দুজনার কেউই কিছু করতে পারেননি। তাই তামিমের অনুপস্থিতিতে টেস্টে অনিবার্যভাবে এখন এক নম্বর ওপেনার সাদমান ইসলাম।
Advertisement
এখন তামিম না থাকায় সাদমানকে এক নম্বর ধরেই দু নম্বর ওপেনার খোঁজা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো কে হবেন সেই ওপেনার? সাদমানের সঙ্গী হবেন কে? তা নিয়েই আলোচনা, পর্যালোচনা ও যত হিসেব নিকেশ।
প্রাথমিক দলে ওপেনার আছেন বেশ কজন, সংখ্যায় তারা পাঁচ। কিন্তু দীর্ঘ পরিসরের হিসেবে কষলে সাদমানের সঙ্গে টেস্টে ওপেন করার মত আছেন মূলত তিনজন- ইমরুল কায়েস, জহুরুল ইসলাম অমি আর সাইফ হাসান।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ইমরুল অভিজ্ঞ, পরিণত এবং ৩৭ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। কিন্তু ফর্মটা ঠিক আগের মত নেই। ব্যাট সেভাবে কথা বলছে না। আফগান ‘এ’ দলের সঙ্গে ৫ ওয়ানডেতে ২১, ৩৩, ২৩, ৪০, ২৮ এবং চার দিনের বেসরকারি টেস্টে ২, ০ এবং ৩৪। কাজেই তার ওপর আস্থা রাখতে গিয়ে সংশয়ে নির্বাচকরা।
আরেক সিনিয়র পার্টনার জহুরুলও আছেন বিবেচনায়। কিন্তু তিনি দীর্ঘ ৬ বছর টেস্ট খেলার বাইরে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের এপ্রিলে আগে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। এছাড়া একটু পিঠের ব্যথাও আছে। তাই তাকে নেবেন কি নেবেন না?- দোটানায় নির্বাচকরা।
Advertisement
তাদের চেয়ে অনেক হিসেব নিকেশেই এগিয়ে রয়েছেন সাইফ হাসান। বয়সে নবীন ও সম্ভাবনাময়। এ মুহুর্তে সীমিত ওভারের ফরম্যাট আর দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট- সব কটায় হাই পারফরমেন্স ইউনিটের এক নম্বর ওপেনার সাইফ। পরিপাটি ব্যাটিংশৈলি। ধীরস্থির সাইফের দিকে দৃষ্টি নির্বাচকদের।
অবস্থাদৃষ্টে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সাইফকে খুঁটিয়ে দেখতেই সময় নিচ্ছেন নির্বাচকরা। ভাবছেন এখন আবার সাইফকে কোধায় কিভাবে খুঁটিয়ে দেখা হবে? হ্যাঁ, সাইফকে ভালমত পরখ করার ক্ষেত্রও আছে নির্বাচকদের। আজ (মঙ্গলবার) থেকে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে শ্রীলঙ্কান ইমার্জিং দলের সঙ্গে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের চার দিনের ম্যাচ।
সেখানে সাইফের পারফরমেন্স পাখির চোখে পরখ করতেই মাঠে উপস্থিত থাকবেন নির্বাচকরা। ২৭ আগস্ট থেকে পরের তিনদিনেই জানা হয়ে যাবে সাইফ কী করলেন, কেমন খেললেন? ভাল খেললে তো কথাই নেই। তাকেই হয়ত বেছে নেয়া হবে।
কারণ, সাইফ রানে আছেন। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে লঙ্কান ইমার্জিং দলের বিপক্ষে একটি সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি (৫৫) আছে তার। যে মাঠে কাল থেকে চার দিনের ম্যাচ, ২৪ আগস্ট সেই মাঠেই তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শতরান (১৩০ বলে ১১৭) করেছেন সাইফ।
এখন সেই খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে চার দিনের ম্যাচে রান পেলেই হয়ত ভাগ্য খুলে যাবে। প্রথমবারের মত টেস্ট দলে ডাক পেতে পারেন ঢাকার এ ২০ বছরের তরুণ ওপেনার। কাজেই খুলনায় ইমার্জিং দলের চার দিনের ম্যাচে সাইফের পারফরমেন্সের দিকেই আসলে তাকিয়ে নির্বাচকরা। সে ম্যাচ দেখতে এরই মধ্যে খুলনায় চলে গেছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন।
এআরবি/এসএএস/পিআর