দেশজুড়ে

কাজে আসছে না ৭৮ লাখ টাকার দুই সেতু

কুড়িগ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ কর্তৃক গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় নির্মিত সেতুগুলো এখন এলাকাবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধুমাত্র দু’পাশে মাটি ভরাট না করায় বছরের পর বছর সেতুগুলো অব্যবহৃতই থেকে যায়।

Advertisement

এভাবে সঠিক পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতার অভাবে একদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে, অপরদিকে এসব উন্নয়ন কাজের সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। বিভিন্ন দফতরে দরখাস্ত-দেনদরবার করেও মেলে না সমাধান। ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীর।

জানা যায়, উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীনে কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের হেমেরকুটি গ্রামে ২০১৭ সালে দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩৯ লাখ টাকা। কিন্তু দু’দিকে মাটি ভরাট না করায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের সেতু দুটি জনগণের চলাচল অনুপযোগীই রয়ে গেছে। দু’বছর কেটে গেলেও এলাকাবাসীর কোনো উপকারে আসছে না। বর্ষা-শুষ্ক কোনো মৌসুমেও এটি ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।

এনিয়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্ণা দিয়েও মেলেনি সুফল। দু’দিকে মাটি না থাকায় সেতু দুটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।

Advertisement

হেমেরকুটি গ্রামের ফজল আলী, রহমত মিয়া, কাদের, হাজেরা বেগমসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন, সরকার সেতু বানায় জনগণের উপকারের জন্য। অথচ এই সেতু দুটি বানানোর পর থেকে আমরা একদিনও হাঁটতে পারিনি। সেতু দুটি এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়াও আবু বক্কর, মজিবর ও মীম জানান, সেতুর পাশ ভাঙছে, আবাদি জমিতে বালু পড়ছে। এমন হাজারো সমস্যা নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়। বর্ষায় ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো স্কুল যেতে পরে না। তখন খুব সমস্যা হয়। কিন্তু দেখার কেউ নেই।

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় নির্মিত এমন অনেক সেতু রয়েছে যা স্থানীয়দের কোনো কাজে আসছে না। এ ব্যাপারে কর্মকর্তারা নির্বিকার। নেই কোনো মনিটরিং, ফলোআপ বা জবাবদিহিতার ব্যবস্থা। জনপ্রতিনিধিরাও অভিযোগ করতে করতে আশা ছেড়ে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা খায়রুল আনাম জামান, ত্রাণ শাখার যেসব সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করা হয়; তা স্ব-স্ব উপজেলা থেকে বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। তবে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

Advertisement

নাজমুল হোসাইন/এমএমজেড/পিআর