দেশজুড়ে

ভাইকে ফাঁসানোর কারণেই বিচারকের খাস কামরায় ছুরি মেরে হত্যা

কুমিল্লার আদালতে বিচারকের খাস কামরায় ফারুক নামে হত্যা মামলার এক আসামিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি মো. হাসানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে।

Advertisement

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক প্রদীপ মন্ডল সোমবার বিকেলে ওই আসামির বিরুদ্ধে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এ চার্জশিট জমা দেন।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৫ জুলাই কুমিল্লা আদালত ভবনের তিনতলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতে মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের হাজী আবদুল করিম হত্যা মামলার আসামিদের হাজিরার তারিখ ছিল।ওই দিন মামলার দুই আসামি লাকসাম উপজেলার ভোজপুর গ্রামের শহিদুল্লাহর ছেলে মো. হাসান এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের অহিদুল্লাহর ছেলে মো. ফারুক আদালতে হাজিরা দিতে আসেন।

মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামি হাসান তার সহযোগী একই মামলার আসামি মো. ফারুককে আদালতে বিচারকের সামনে ছুরিকাঘাত করে। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে ফারুক বিচারকের খাস কামরায় ঢুকে পড়লে সেখানে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Advertisement

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের এএসআই ফিরোজ আহাম্মদ ঘাতক হাসানকে রক্তমাখা ছুরিসহ আটক করেন। তিনি ঘটনার বাদী হয়ে ওই দিন রাতে হাসানের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রদীপ মন্ডল বলেন, মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তরের পর দীর্ঘ ৪৩ দিনের মাথায় একমাত্র আসামি হাসানকে অভিযুক্ত করে সোমবার বিকেলে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামের হাজী আব্দুল করিম। এ ঘটনায় আব্দুল করিমের দ্বিতীয় স্ত্রী সাফিয়া বেগম বাদী হয়ে ফারুক ও হাসানসহ আটজনের নামে মনোহরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় হাসান ও তার দুই ভাই মিজান ও নুরুজ্জামানকে আসামি করা হয়। এ মামলায় হাসান ও তার দুই ভাইকে ফাঁসানোর অভিযোগে ফারুক ও মামলার বাদীর পরিবারের সঙ্গে ঝগড়া এবং মারামারি হয়। ফারুকের বাবা অহিদুল্লাহ এ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পলাতক থাকায় মামলাটি নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হয় বলে হাসানের ধারণা। সেই ক্ষোভ থেকে হাসান হাজিরা দিতে আসার সময় ধারালো ছুরি সঙ্গে নিয়ে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করে এবং সেখানে ছুরিকাঘাতে ফারুককে হত্যা করে।

মো. কামাল উদ্দিন/এএম/এমকেএইচ

Advertisement