বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেছেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কোনো চিকিৎসকের কাছ থেকে একটি টাকার ফান্ডও সংগ্রহ করিনি।তিনি বলেন, পাঁচ বছর এমপিগিরি করেছি, লালবাগ কোতোয়ালী এলাকা ঘুরে খোঁজ নিয়ে দেখেন কোনো স্পট (দুর্নীতি) পান কি-না। আমি কাউকে বলবো আমার টাকার দরকার, আমি কি রাস্তার ছেলে, আমার বাপ-দাদার ইতিহাস নাই। আমি কার কাছে পয়সা নেবো। যদি সত্যি সত্যি কিছু খুঁজে পান তবে মাইকিং করে বলুন। কোনো আপত্তি করবো না।তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা আশা করেন বলে মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার রাতে জাগো নিউজে প্রকাশিত ‘এক যুগ পর স্বাচিপের সম্মেলন : চলছে নানা সমীকরণ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের একাংশের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।বুধবার দুপুরে তিনি এ প্রতিবেদকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে স্বাচিপের রাজনীতি তথা চিকিৎসকদের রাজনীতি সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেন।তিনি আরো বলেন, ৯০ পরবর্তী সময়ে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠনের ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আপার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে আলাপ করে স্বাচিপ প্রতিষ্ঠা করি। যে প্রতিষ্ঠানের জম্ম দিয়েছি সে প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের কাছে আমি কি টাকা চাইতে পারি- প্রতিবেদকের কাছে পাল্টা প্রশ্ন রাখেন তিনি।এর আগে জাগো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক জানান, ১/১১ সময় মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন তথাকথিত মাইনাস টু ফর্মুলায় জড়িত ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি যখন লালবাগ থেকে নির্বাচন করেন তখন স্বাচিপের ১২০০ থেকে ১৪০০ ডাক্তার তার নির্বাচনী ফান্ডে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ করে টাকা দিয়েছেন। ওই সময় তিনি বিএনপি-জাময়াত সমর্থিত ড্যাব চিকিৎসকদের সাহায্য গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে দল ক্ষমতায় আসলে তিনি ড্যাবের পছন্দের চিকিৎসকদের ভালো পদায়ন ও পোস্টিংয়ের জন্য ইকবাল আসর্লানকে চাপ দেন। তবে সাধারণ সদস্যদের চাপের মুখে ইকবাল আর্সলান সে কথা শোনেননি। ফলে সেখান থেকেই তাদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এছাড়া যে সকল চিকিৎসক টেন্ডারবাজিতে জড়িত তারা কাঙ্ক্ষিত সুবিধা না পাওয়ায় ইকবাল আর্সলানের ওপর মহাবিরক্ত। ফলে তারা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের পক্ষে নেমেছেন।’এর প্রেক্ষিতে তিনি দাবি করেন, ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের সব মিছিলেই তিনি ছিলেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এখন যারা বড় বড় পদে আছেন তাদের কয়জন সেদিন ওই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. রুহুল হকের মন্ত্রীত্বের পাঁচ বছর কিংবা বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের দফতরে তিনি কদাচিৎ গেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরেও তিনি তদবির করতে যাননি।তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাস্থ্য সেক্টরে কে-কী করছে তা সবই তিনি জানেন। কিন্তু থুথু উপরে ফেললে নিজের উপরে পড়ে তাই তিনি কারো বিপক্ষে কিছু বলতে চাননা।আসন্ন স্বাচিপের সম্মেলন কিংবা নির্বাচন হলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নেত্রীর নির্দেশ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তই নেবেন না। এর চেয়ে বেশি কিছু স্পষ্ট করে বলতে চাননি তিনি।এমইউ/এসকেডি/বিএ
Advertisement