দেশজুড়ে

কলেজের শহীদ মিনার ভেঙে বাবার ম্যুরাল বসালেন এমপি

পাবনার সুজানগর উপজেলায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার ভেঙে নিজের বাবার ম্যুরাল তৈরি করেছেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির।

Advertisement

সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা বলছেন, নতুন আরেকটি শহীদ মিনার তৈরির পরই আগেরটির স্থানে এমপির বাবার ম্যুরাল তৈরি করা যেত। কিন্তু তা না করে শহীদ মিনার ভেঙে নিজের বাবার ম্যুরাল তৈরি করা ঠিক হয়নি এমপির।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, অতি উৎসাহী কিছু কর্মকর্তা এমপির হয়ে এই কাজটি করে আলোচনায় আসতে চেয়েছেন। এখন উল্টো সমালোচনার মুখে পড়েছেন তারা।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার ভেঙে নিজের বাবার ম্যুরাল তৈরি করেছেন এমপি আহমেদ ফিরোজ। ম্যুরাল নির্মাণকাজ এখন শেষ পর্যায়ে।

এ বিষয়ে সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক বলেন, কলেজ পরিচালনা কমিটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শে জায়গা নির্ধারণ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের অর্থায়নে ম্যুরালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। শহীদ মিনারটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির আগেই কলেজ মাঠের দক্ষিণ পাশে বড় পরিসরে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের বাবা মরহুম তফিজ উদ্দিন আহমেদ যেহেতু সাবেক সংসদ সদস্য ও তিনি কলেজটিতে বিভিন্ন সময়ে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, তাই তার স্মৃতি রক্ষার্থে এ ম্যুরালটি তৈরি করা হচ্ছে।

সাতবাড়িয়া কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত বাচ্চু বলেন, পাবনা-২ আসনের এমপি আহমেদ ফিরোজ কবিরের বাবা মরহুম আহমেদ তফিজ উদ্দিন তিনবারের এমপি এবং দু’বারের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৬৬ সালে সাতবাড়িয়া কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার অবদান রয়েছে। তার স্মৃতি রক্ষায় ম্যুরালটি তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পুরনো শহীদ মিনারের ডিজাইন ভুল ছিল এবং এটি ছিল কলেজের মূল গেটসংলগ্ন। শিক্ষার্থীদের এতে ফুল দিতে সমস্যা হতো। এজন্য ২০১৮ সালের জুন মাসে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, কলেজ ক্যাম্পাসের দক্ষিণ পাশে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। তবে টেকনিক্যাল ভুল হয়েছে, শহীদ মিনার নির্মাণকাজ শুরুর পর ম্যুরালটি নির্মাণ করা উচিত ছিল।

Advertisement

এ ব্যাপারে পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, শহীদ মিনার পাবনা জেলার ব্র্যান্ডিংয়ের বিষয়। এ জেলার শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। ভুল বোঝার অবকাশ নেই। পরিচালনা পর্ষদের নেয়া আগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজই ক্যাম্পাসে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরুর জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছি।

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত দেবনাথ বলেন, ডিসির সঙ্গে কথা হয়েছে। সোমবার ক্যাম্পাসে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

একে জামান/এএম/এমকেএইচ