গায়ের রঙ সে যেমনই হোক পৃথিবীজুড়ে নায়িকাদের সৌন্দর্য একটা গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা। আর দশজন নারী থেকে নায়িকা থাকবেন অনেক বেশি আলাদা। রূপে-গুণে-লাবণ্যে হবেন অনন্যা। তিনি চুম্বকের মতো টানবেন পুরুষকে গোপন বাসনায়। এটাই স্বাভাবিক।
Advertisement
কিন্তু সৌন্দর্যই যদি কাল হয়ে দাঁড়ায় নায়িকার তখন সেটা বেশ অস্বাভাবিক বটে। একদম তাই ঘটেছে ভারতীয় এক নায়িকার ভাগ্যে। যার অতিরিক্ত রূপ-সৌন্দর্য তার ক্যারিয়ারের প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।
বলছি বলিউড অভিনেত্রী জেসমিনের কথা। যিনি ১৯৮৮ সালে ‘ভিরানা’ সিনেমা দিয়ে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। সেই ছবিটি ছিলো বি গ্রেড ভয়ের। একেবারে কাল্ট বলা যায়।
রামসে ব্রাদার্সের এই সিনেমা দিয়ে নায়িকা হিসেবে সবার নজর কাড়েন জেসমিন। তাকে নিয়ে সবদিকে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। তাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিলো বলিউডের প্রথম সারির প্রযোজক-নির্মাতারা। অনেক সুপারস্টারদের বিপরীতেও হয়তো খুব দ্রুত দেখা মিলতো তার।
Advertisement
বলিউডে যোগ হতো আরও একজন ডিভার নাম। কিন্তু অতিরিক্ত সৌন্দর্যই সেই পথটা বন্ধ করে দিলো জেসমিনের।
ভিরানা ছবিটি মুক্তির পর রাতারাতি আলোচনায় চলে আসেন জেসমিন। সবখানে তাকে নিয়ে শুরু হয় হৈ চৈ। তার আকর্ষণীয় ফিগার, প্রতিমার মতো চোখ-মুখ যেন আগুন ধরিয়ে দিলো কোটি কোটি পুরুষের অন্তরে।
তার উপর নজর পড়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডাকসাইটে সব ডন-গডফাদারদেরও। দাউদ ইব্রাহিম থেকে শুরু করে আরও অনেক প্রভাবশালীরা জেসমিনকে কাছে পেতে মরিয়া হয়ে উঠে। তাকে বাগে আনতে না পেরে বহু টাকার প্রস্তাবও দেয়া হয়। অতিষ্ঠ হয়ে উঠে জেসমিনের জীবন।
ভুগছিলেন নিরাপত্তাহীনতাতেও। বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন নায়িকা। কিন্তু উপমহাদেশে তখন ডন আর গডফাদারদের স্বর্ণযুগ। ভারতের মহারাষ্ট্র পুলিশের একটা বড় অংশ আন্ডারওয়ার্ল্ডের কাছে কার্যত বিক্রি হয়ে আছে। তাই অভিযোগ জানিয়েও কোনো কাজ হয় না।
Advertisement
উপায় না দেখে নিজেকে বাঁচাতে স্বপ্নের ক্যারিয়ার ফেলে জেসমিন দেশ ছাড়লেন। পাড়ি জমান আমেরিকায়। সেখানেই এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন। আর কোনো দিন ফেরেননি ভারতে।
শোনা যায়, তিনি নাকি নিজেকে ভারতীয় হিসেবে পরিচয়ও দেন না কোথাও। যে দেশ তাকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি, যে দেশ তাকে জন্ম দিয়েও তার স্বাভাবিক জীবনের ব্যবস্থা করতে পারেনি সেই দেশকে তিনি আর কোথাও ধারণ করেন না।
এলএ/এমকেএইচ