মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে নাকি হয়নি- এ নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দাবি, শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। অপরদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জোর দাবী প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রশ্নই আসেনা। প্রশ্নপত্র সিলগালা করে ট্রাঙ্কে তালাবদ্ধ করা আছে। র্যাব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা যাচাইয়ে পারস্পরিক মতবিনিময় করেনি বলে জানা গেছে। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার তথ্য সঠিক নাকি বেঠিক তা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য চলতি বছরের ভর্তি পরীক্ষায় রেকর্ডসংখ্যক ৮৪ হাজারেরও বেশী পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। মাত্র দু’দিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবরে হাজার হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে পড়েছেন। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা সত্যি কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বুধবার র্যাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চিকিৎসকসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময়ে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রসহ প্রায় সোয়া কোটি টাকার একাধিক চেক ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।র্যাব জানায়, মেডিকেলের প্রশ্নপত্র সরবরাহ ও ভর্তি নিশ্চয়তার রফা হতো ১২ লাখ টাকায়। আর এ সমুদয় অর্থের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আগাম চেক নেয়া হতো। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এক ডাক্তারসহ চারজনকে আটকের পর তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানা গেছে।তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন ) অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নান বুধবার বিকেলে জাগো নিউজকে জানান, প্রতারকচক্রের সদস্যরা মডেল প্রশ্নপত্র তৈরী করে মিথ্যা প্রতিশ্রæতি দিয়ে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে আগাম চেক সংগ্রহ করেছিল। শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কোনভাবেই ফাঁস হয়নি।উল্লেখ্য, প্রতি বছরই মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় এমন তথ্য আকাশে বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে প্রশ্নপত্র কী সত্যিই ফাঁস হয় নাকি নিছক গুজব। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ইতিপূর্বে প্রশ্নপত্র ফাঁসের একাধিক প্রমান তারা পেয়েছেন। ৩/৪বছর আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৎকালিন মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. শিফায়েত উল্ল্যাহ পরীক্ষার কয়েকদিন আগে ছাপাখানা থেকে অর্ন্তবাসে করে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় এক কর্মচারীকে আটক করেন। ফলশ্রæতিতে পরীক্ষা সাত দিন পিছিয়ে দেয়া হয়।আরেক বছর ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রখ্যাত নিউরোলজিষ্ট অধ্যাপক ডা. কাজি দীন মোহাম্মদ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস না হলে একটি বিশেষ এলাকার পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে একসঙ্গে এতো পরীক্ষার্থী ঢামেকে কিভাবে সুযোগ পেল।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক জাগো নিউজকে জানান, পরীক্ষার আগের রাতে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। নগদ ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়ে রাতেই প্রস্তুুতির জন্য প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরেরর কর্মকর্তা বরাবরই তা গুজব বলে উড়িয়ে দেন।এদিকে, বুধবার র্যাবের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচান শুরু হয়েছে।‘প্রশ্নপত্র তো সেফটি ট্রাঙ্কে তালা মারা : প্রশ্নপত্র পাবে কোথায়? স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকের এমন বক্তব্যের নীচে সজল আশফাক নামে একজন লিখেছেন ‘প্রশ্নপত্র আউট হয় ছাপা হওয়ার আগেই, তৈরী হওয়ার সময়, কম্পিউটার বা হাতে লিখা ফরমেট থেকে। এটাও কি বলে দিতে হবে!!!!!!!।আসমা উল হোসনা তৃষনা নামে আরেকজন লিখেছেন ‘তুমি সর্প হইয়া দংশন করো ওঝা হইয়া ঝাড়ো--- বলেছিলাম পাবলিক কিছু করেনা, তোরাই চোর আবার তোরাই পুলিশ হার বজ্জাতের দল!এমইউ/এএইচ/আরআইপি
Advertisement