‘গো’ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দানের জন্য গ্রামীণফোনকে করা জরিমানার ৩০ কোটি টাকা চেয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দেয়া তিনটি চিঠি বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিটিআরসি আইনের ৬৩ ও ৬৫ ধারা অনুযায়ী চার মাসের মধ্যে নতুন করে গ্রামীণফোনকে চিঠি দিতে বলা হয়েছে।
Advertisement
চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গ্রামীণফোনের পক্ষে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রোববার (২৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আজ (রোববার) রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
রায়ে এনটিটিএন (ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) নামের ইন্টারনেট সার্ভিসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তা ২০১৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখায় রাষ্ট্রের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে -তা অডিটর জেনারেলের মাধ্যমে নিরূপণ করতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
রায়ের পর ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণফোন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের বিটিআরসি অনুমোদন ছাড়াই এনটিটিএন সার্ভিস চালু রাখে, যা আইনসিদ্ধ নয় বলে রায় দিয়েছেন আদালত। এ সার্ভিস চালুর মাধ্যমে রাষ্ট্রের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে -তা অডিটর জেনারেলের মাধ্যমে নিরূপণের জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
‘গো’ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাকে অবৈধ ঘোষণার কারণ হিসেবে বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী কোনো মোবাইল ফোন অপারেটর সরাসরি তাদের অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে এ ধরনের ‘লাস্ট মাইল কানেকটিভিটি’ সেবা দিতে পারে না। লাস্ট মাইল কানেকটিভিটি হলো- অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সর্বশেষ পর্যায়ের সংযোগ।
কিন্তু গ্রামীণফোন ‘গো’ ব্রডব্যান্ড সেবার নামে সোনালী ব্যাংককে সরাসরি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে -এমন অভিযোগ তোলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসির কাছে তারা লিখিত অভিযোগ দেয়।
অবৈধ সেবা দেয়ার কারণ জানতে ওই বছরের মার্চের শেষ দিকে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিটিআরসি। কিন্তু সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় গ্রামীণফোনকে জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়।
Advertisement
এরপর ৩০ কোটি টাকা জরিমানা করে তা পরিশোধ করতে ওই বছরের ৬ ও ২৯ নভেম্বর এবং ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি পৃথক তিনটি চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে রিট আবেদন করে গ্রামীণফোন। এ রিট আবেদনে ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং তিনটি চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেন। সেই রুলের ওপর রোববার (২৫ আগস্ট) রায় দেয়া হলো।
এফএইচ/আরএস/পিআর