সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যে (এমডিজি) বড় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ৪৮ সূচকের বেশিরভাগই অর্জন হয়েছে। তবে দারিদ্র্যতা, কর্মসংস্থান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত ও মান নিশ্চিতকরণ, নারীদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতিতে সন্তান প্রসবসহ বেশ কিছু সূচকে এখনও পিছিয়ে রয়েছে দেশ। এছাড়া সূচকে উন্নত দেশগুলোর সহায়তা কথা থাকলেও তা তারা রক্ষা করেনি।বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার এই তথ্য প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এমডিজি অর্জন : বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদন-২০১৫ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মোহাম্মদ আলী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম।প্রতিবেদনে বলা হয়, এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ অসামান্য সাফল্য লাভ করেছে। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার কমে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। শিশু মৃত্যু, মাতৃমুত্যু, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় লিঙ্গের সমতা অর্জন, এইচআইভিসহ অনেক সূচকে অগ্রগতি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। তবে এখনও বেশ কিছু সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা এই সূচকে সন্তোষজনক অগ্রগতি হলেও এখনও ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ দরিদ্র্য। যার মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশ অতি দারিদ্র্য। প্রতি বছর গড়ে এক দশমিক ৭০ শতাংশ হারে বাংলাদেশ দারিদ্র্যতা দূর করছে। ২০১৫ সালের ৮ শতাংশ লক্ষ্য মাত্রার বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন সাড়ে ৬ শতাংশ। তবে কর্মসংস্থান তৈরিতে অনেক পিছিয়ে রয়েছে দেশ।সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা এ লক্ষ্যেও কোনোটিতে শতভাগ সাফল্য পায়নি। তবে একটি অর্জনের পথে। অন্যগুলোতে আরো নজর দিতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নএর পাঁচটি সূচকের দুইটি অর্জিত হয়েছে। আর তিনটিতে আরো নজর দিতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শিশু মৃত্যু হারবাংলাদেশ এই একটি সূচকে লক্ষ্য ছাড়িয়ে গেছে। পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও। তবে হামের টিকা দানের ক্ষেত্রে আরো কিছু পথ যেতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।মাতৃ স্বাস্থ্যের উন্নয়ন বাংলাদেশ মাতৃ স্বাস্থ্যের উন্নয়নে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পেয়েছে আন্তজার্তিক সম্মান। তবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার তাগিদ দেয়া হয়েছে। এইচআইভি/এইডস এমডিজিতে বাংলাদেশ এই সূচকে সঠিক পথে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক কম। এর বেশির ভাগ সূচকই অর্জন করেছে বাংলাদেশ। পরিবেশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবেশগত স্থিতিশীলতা অর্জনে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। ১৯৯০ সালে দেশে বনাচ্ছিদ জমি ছিলো ৯ শতাংশ। ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ১৯৯০ সালে বস্তিতে বাস করত ৭ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। ২০১৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বে বাংলাদেশের সহায়তা প্রাপ্তির হার তুলনামূলক ভাবে কম। উন্নয়ন অংশীদারগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে অর্থ ছাড় দেয়নি বলে বাংলাদেশ সরকারের সর্বশেষ এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।এসএ/এসকেডি/এএইচ/পিআর
Advertisement