দশম জাতীয় সংসদ ভেঙে না দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের নেয়া শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
Advertisement
ওই বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট গত ১৮ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে আদেশ দেন।
আদালতে ওই দিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) আপিল আবেদন দায়ের করেন রিটকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দীন খোকন।
Advertisement
আপিলের যুক্তির বিষয়ে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন শনিবার জাগো নিউজকে বলেন, একটি সংসদ চলমান থাকার পরে আবার একটি সংসদ নির্বাচন হয় কি করে? একটা পার্লামেন্ট বিদ্যমান থাকার পরেও অপর পার্লামেন্টের নির্বাচন করা আনকনস্টিটিউশনাল। দুটা পালার্মেন্ট এক সঙ্গে চলতে পারে না। এই যুক্তিতে আমরা আপিল ফাইল করেছি। দেখি কবে শুনানি হয়। শুনানির বিষয়টি এখনও নির্ধারণ হয়নি।
এর আগে রিটে যুক্তি ছিল ‘সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদে সংসদ ভেঙে দিয়ে পুনরায় সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু সেই অনুচ্ছেদ প্রতিপালন না করে পুনরায় সংসদ সদস্যরা শপথ নেয়ায় বর্তমানে দুটি সংসদ বহাল রয়েছে,যা সংবিধানের পরিপন্থী। বর্তমানে এসব সংসদ সদস্যের দ্বারাই মন্ত্রিপরিষদ গঠন করা হয়েছে। আগের একটি সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় পুনরায় সংসদ ও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়া সম্পূর্ণ অবৈধ।
চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তাওহীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন রিটটি দায়ের করেন।
রিটে বলা হয়, সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদে সংসদ ভেঙে দিয়ে পুনরায় সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ওই অনুচ্ছেদ প্রতিপালন না করে অর্থাৎ দশম সংসদ ভেঙে না দিয়ে একাদশ সংসদে নির্বাচিত সদস্যরা শপথ নেয়ায় বর্তমানে দুটি সংসদ বহাল রয়েছে, যা সংবিধান পরিপন্থী।
Advertisement
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি একাদশ সংসদে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ বাতিলের দাবি জানিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আইনি নোটিশও দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
অপর আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তাওহীদের পক্ষে নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তবে ওই নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়।
এরপর গত ১৬ জানুয়ারি রিটটির ওপর শুনানি শেষ হলে ১৭ জানুয়ারি আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট। তবে আদেশের দিন রিট আবেদনকারী উপযুক্ত পক্ষ না হওয়ায় আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করিয়ে নেন রিটকারীর আইনজীবীরা। এরপর ব্যারিস্টার খোকন নতুন করে একই গ্রাউন্ডে রিট দায়ের করেন। সর্বশেষ ৬ ফেব্রুয়ারি এই রিটের শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। এর পরের দিন ১৮ ফ্রেবুয়ারি রিটের বিষয়ে আদেশের নির্ধারিত দিনে আদালত রিটটি খারিজ করেন।
এফএইচ/জেডএ/এমএস